লেখাপড়া না করে মিলেনিয়াম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেউ ডিগ্রি নিতে পারেন না। বাংলাদেশে অনেক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আছে। যেখানে একজন ছাত্র বা ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের খাতায় নাম লেখান, কোনো দিন বিশ্ববিদ্যালয় যান না, চার বছর পরে বিশ্ববিদ্যালয় একটি সনদ ও ডিগ্রি লাভ করেন। এরকম প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশে অনেক আছে। আমরা কিন্তু সেই পথে যাই না। আমরা কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাকে ব্যবসা হিসেবে গ্রহণ করিনি। আমরা শিক্ষা ব্যবসা প্রত্যাখ্যান করেছি।
এই বক্তব্য দিয়েছেন স্পষ্টভাষি বক্তা হিসেবে পরিচিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান। গত সোমবার রাজধানীর রাজারবাগে দি মিলেনিয়াম ইউনিভার্সিটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত পিঠাপুলি উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ড. মঈন খান বলেন, গতকালকেও আমার একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে কথা হয়েছে। তার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে তিনি দুঃখ করে বলেছিলেন- বাংলাদেশ থেকে কি শিক্ষা ধ্বংস হয়ে গেলো, এই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কি শিক্ষা দিচ্ছে। আমি তখন তাকে বলেছিলাম- ছোট্ট একটি অতি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় আছে- তার নাম হচ্ছে দি মিলেনিয়াম ইউনিভার্সিটি। সেখানে অট্টালিকা নেই, সেখানে হয়তো ঐশ্বর্য নেই, অনেক কিছু নেই। কিন্তু সেখানে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করে ডিগ্রি নিয়ে থাকেন।
বাংলাদেশে একশোর বেশি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ হলেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এবং যারা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন সেই সব কর্মকর্তা-কর্মচারী। এখানে একটি বোর্ড রয়েছে- বোর্ড অব ট্রাস্টিজ- তারা এই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে একটি বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে পরিচালনা করেন।
প্রসঙ্গত, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দি মিলেনিয়াম ইউনিভার্সিটিকে নানাভাবে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন ড. মঈন খান। বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপারসন হিসেব দায়িত্ব পালন করছেন তার স্ত্রী অ্যাডভোকেট রোকসানা খন্দকার। মঈন খানের বক্তব্যের সময়ে তিনিও সেখানে ছিলেন।
মঈন খান তার বক্তব্যে আরো বলেন, আমরা এখন বাস করছি মানব সভ্যতার অত্যন্ত অ্যাডভান্স যুগে। যেখানে ইনফরমেশন টেকনোলজি বা আইটি প্রায় সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। এটা হচ্ছে সভ্যতার একটি দিক। সভ্যতার অন্য একটি দিক রয়েছে। বাংলার এই যে অপরূপ রূপ, যে ঐতিহ্য, বারো মাসে তেরো পার্বন। এগুলো হচ্ছে বাঙালির জীবনে অন্তরের সৌন্দর্যের বহিঃপ্রকাশ।
তিনি বলেন, একটি শব্দ আছে, যেটাকে বলে কেক। ডিকশনারিতে কেকের নাম পিঠা। আসলে পিঠা আর কেক কিন্তু এক জিনিস না। কেক কালাদা, পিঠা আলাদা। তো সেই পিঠা উৎসব শত সহস্র বর্ষ ধরে আমাদের সমাজে চলে এসেছে। আজকের এই আধুনিক যুগেও আধুনিক এতো চমৎকারভাবে এখানে পিঠা উৎসব আয়োজন করা হয়েছে। আমি সত্যি গর্ববোধ করছি। আমি আরেকটু খুশি হতাম যদি দেখতাম মাঠটি আগের মত সবুজ ঘাসে ভরা। আমি ভাবছিলাম আবার আগের মতো এই মাটি ঘাসে ভরা যায় কিনা। তাহলে পরিবেশটা আরো সুন্দর লাগতো। আমরা সবাই প্রকৃতির আরো কাছে ঘেঁষতে পারতাম। এই যে গাছগুলো দেখা যাচ্ছে- এগুলো হয়তো অতীতে যারা ছিলেন তারা রোপণ করেছিলেন। আমরা কিন্তু সেই গাছের সুশীতল ছায়া এখন পাচ্ছি। সে ছায়ায় কিন্তু আমরা বসে আছি। আমরা যদি আজকে দশটা বা বিশটা বৃক্ষরোপণ করে যাযই। তাহলে কিন্তু আজকে থেকে ৫০ বা ১০০ বছর পরে এখানে যারা পড়বেন ও পড়াবেন তারা হয়তো সেই গাছগুলোর ছায়া পাবেন।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন আব্দুল মোমেন খান মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ও ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডক্টর অভিনয় চন্দ্র সাহা, দি মিলেনিয়াম ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার মাহমুদা খাতুন, ফ্যাকাল্টি অব বিজনেস স্টাডিজের ডিন প্রফেসর ইবরার আলম প্রমুখ। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন মো. সালাহউদ্দিন।