শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের আশ্বাসে শূন্যপদে সর্বজনীন বদলির দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান ও লংমার্চ কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। সব ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের বদলির আওতায় আনতে শিগগিরই একটা প্রস্তাবনা তৈরি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এনটিআরসিএ জমা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে বদলি প্রত্যাশী শিক্ষকদের এমন আশ্বাস দেয়া হয়। এর আগে শিক্ষকদের পক্ষে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আলোচনায় যায়।
পরে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হুমায়ুন কবির ইনডেক্সধারী সব শিক্ষকের বদলির দাবির বিষয়টি শুনেছেন ও শিক্ষকদের বদলির আওতায় আনা হবে বলে আশ্বস্ত করেন।
একইসঙ্গে সব ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের কীভাবে বদলির আওতায় আনা যায় দ্রুত সময়ের মধ্যে তার একটা প্রস্তাবনা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে ও এনটিআরসিএ চেয়ারম্যানের কাছে জমা দিতে বলেছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা দ্রুত সময়েই বদলির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন এবং পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছেন।
এ সময় এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ মফিজুর রহমান বলেছেন, বর্তমানে জারিকৃত বদলি নীতিমালার কিছুটা সংশোধন করলেই বদলিবিষয়ক সমস্যা সমাধান হবে।
এর আগে সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকেরা। শিক্ষকরা জানিয়েছে, বর্তমান সরকার এনটিআরসিএর সুপারিশ প্রাপ্ত শিক্ষকদের বদলির প্রজ্ঞাপন জারি করেছে যা নিরসন নয়, বৈষম্য সৃষ্টি করে শিক্ষক-কর্চারীদের হতাশ করেছে। তাই সর্বজনীন বদলির প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
তারা জানায়, এমপিওভুক্ত হাজারো শিক্ষক নিজ-নিজ এলাকা থেকে কয়েকশ কিলোমিটার দূরে সামান্য বেতনে চাকরি করে আসছে। দূরে চাকরি করায় তাদের নানা ধরনের সমস্যায় মানসিকভাবে চরম হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। যার ফলে ক্লাসে পাঠদান কার্যক্রমে মনযোগ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেক শিক্ষক স্বজন হারানোর সংবাদ পেয়েও বাড়িতে গিয়ে জানাজা, কাফন-দাফন এর কাজে অংশগ্রহণ করতে পারেন না যা খুবই বেদনাদায়ক।
শিক্ষকেরা জানান, বদলি প্রত্যাশীরা এই নীরব কান্না বুকে ধারণ করে মনোকষ্ট নিয়ে চাকরি করছেন। অথচ বদলি চালু করতে সরকারের কোনো আর্থিক বাজেটের প্রয়োজন নেই।
২০২১-এর এমপিও নীতিমালার আগে সব এমপিও নীতিমালায় এমপিওভুক্ত ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের বদলি চালুর বিষয়টি উল্লেখ ছিলো। ১ আগস্ট শুধুমাত্র এনটিআরসিএ সুপারিশ প্রাপ্তদের পারস্পরিক বদলির প্রজ্ঞাপন দেয় যা ১ শতাংশ শিক্ষকেরও উপকারে আসছে না।
বর্তমান সরকারের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করলে সর্বজনীন বদলির আশ্বাস দিয়েও শুধুমাত্র এনটিআরসিএর সুপারিশকৃত শিক্ষকদের বদলির প্রজ্ঞাপন জারি করে বৈষম্যনিরসনের পরিবর্তে বৈষম্য সৃষ্টি করে শিক্ষক-কর্চারীদের হতাশ করে। শিক্ষক-কমচারীদের এই ক্রান্তিলগ্নে এই সরকারের সহযোগিতা ও সমর্থন প্রত্যাশা করছি।