ঢাকা শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫ , ১০ মাঘ ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

বিনামূল্যের পাঠ্যবই মিলছে যত্রতত্র

শিক্ষা

আমাদের বার্তা প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৩:১৪, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫

সর্বশেষ

বিনামূল্যের পাঠ্যবই মিলছে যত্রতত্র

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বিতরণের বই মিলছে খোলাবাজারে। সরকার এ ব্যাপারে তৎপর হলেও কালোবাজারে চলে যাচ্ছে বিনামূল্যের এসব বই। একইসঙ্গে নতুন শিক্ষাবর্ষের একমাস শেষ হতে চললেও এখনো অর্ধেক শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছায়নি।

এদিকে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বিতরণের বই খোলাবাজারে বিক্রি ও মজুতকারী চক্রের দুই সদস্য আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। গত বুধবার রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক ও দুই ট্রাক বই জব্দ করা হয়। আটককৃতরা হলেন-সিরাজুল ইসলাম উজ্জ্বল (৫৫) ও মো. দেলোয়ার হোসেন (৫৬)।

এ বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনও করেন যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ডিবি-দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম।

এক শ্রেণির অসাধু চক্র বর্তমান সরকারের বই বিতরণ প্রচেষ্টা নস্যাৎ করতে ও আর্থিকভাবে লাভবান হতেই অবৈধ মজুতদারির মাধ্যমে খোলাবাজারে বিক্রয় করছিল বলে জানান তিনি। একই সঙ্গে এই চক্রের দুইজন সদস্যকে আটকসহ আনুমানিক ৮ লাখ টাকা মূল্যের প্রায় ১০ হাজার বিনামূল্যে বিতরণের সরকারি পাঠ্যবই জব্দ করা হয়।

নাসিরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য সরকার কর্তৃক বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করা হয়ে থাকে। বছরের শুরুতে নতুন বই পেয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে।

সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা নস্যাৎ করার লক্ষ্যে কতিপয় অসাধু চক্র শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের পুস্তক অবৈধ মজুতদারির মাধ্যমে খোলাবাজারে বিক্রয় করছে এ রকম তথ্য পাওয়ার পর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবি গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে এবং এই চক্রকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে নিরলসভাবে কাজ শুরু করে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও এনসিটিবির সাবেক সচিব নাজমা আখতার ও আওয়ামী লীগপন্থি কয়েকটি প্রেস মালিকের সিন্ডিকেট এখনো সক্রিয়। এর সঙ্গে রয়েছে কিন্ডারগার্টেন মালিক ও জেলা ও উপজেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সিন্ডিকেট। বছরের পর বছর ধরে তারা বইয়ের চাহিদা দেয়ার সময় অতিরিক্ত চাহিদা দেয় পরে চড়ামূল্যে কালোবাজারে বিক্রি করে বিনামূল্যের পাঠ্যবই।

পাঠ্যবইয়ে সঠিক ইতিহাস সংযোজন, পরিমার্জন ও দ্বিতীয়বার টেন্ডার করা, ভারতে বই ছাপা বন্ধ করাসহ নানা কারণে এবার বই ছাপার প্রক্রিয়া দেরিতে শুরু করতে বাধ্য হয়েছে সরকার। এখনো সব বই স্কুলে না পৌঁছানোয় প্রাথমিক এবং মাধ্যমিকের কিছু ক্লাসের পাঠ্যবই কালোবাজারে চাহিদা রয়েছে। রাজধানীর বাংলাবাজার এবং নীলক্ষেতে পাওয়া যাচ্ছে বিনামূল্যের পাঠ্যবই। এ বিষয়ে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গত কয়েকদিন বাংলাবাজার এবং নীলক্ষেতে অভিযান চালায় এনসিটিবি এবং সরকারের গোয়েন্দা বিভাগ।

গত সোমবার একদিনই বাংলাবাজারের বিভিন্ন দোকান ও গোডাউনে অভিযান পরিচালনা করে পাঁচ হাজারের বেশি কপি বিনামূল্যের পাঠ্যবই জব্দ করেছে এনসিটিবি। আর এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রমনার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমান। অভিযানে উপস্থিত থেকে সহযোগিতা করেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ও এনসিটিবির মনিটরিং টিমের সদস্যরা।

অভিযানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান পরিচালনা করে ২টি দোকানের প্রত্যেকটিকে এক হাজার টাকা করে জরিমানা করেন এবং ৫ হাজার বই জব্দ করে। দোকান ২টি হচ্ছে-বাংলাবাজারের ৬ প্যারিদাস রোডের বই বাজার বিডি ও প্যারিদাস রোডের জাহিদ বুক হাউজ।

বাংলাবাজারের কয়েকজন পুস্তক ব্যবসায়ী এ বিষয়ে জানান, বই বাজার বিডির মালিকের নাম হিরা এবং জাহিদ বুক হাউজের মালিকর নাম জাহিদ মিয়া। তবে এই দুই মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কালোবাজারে বইয়ের অন্যতম হোতা লেটার অ্যান্ড কালার প্রেসের মালিক সিরাজুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি।

এদিকে, মাস্টার সিমেক্সের ছাপানো বইও কালোবাজারে পাওয়া যায়, কিন্তু তারা এ বিষয়ে অস্বীকার করেন।

এনসিটিবির পাঠ্যপুস্তকের মান নিয়ন্ত্রণ, কাগজ ও আর্ট কার্ডের মজুত, গাইড বই মুদ্রণ ও সরকারি বই বাজারে বিক্রির বিরুদ্ধে শুরু থেকেই মাঠে রয়েছে তদারকি দল এবং সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। কিন্তু এরপরে একটি চক্র কৌশলে বিনামূল্যের পাঠ্যবই কালো বাজারে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করছে। অবশ্য এ বিষয়ে সরকার তৎপর থাকলে কোনো চক্রই সফল হবে না মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জনপ্রিয়