স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলোকে পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণ করা হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের এমন ঘোষণার পর কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছে মাদরাসা শিক্ষকরা।
এর আগে দশম দিনের মতো তারা অবস্থান ধর্মঘট পালন করে আসছিলেন। এ দাবি পূরণ বাস্তবায়ন হলে শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান হবে।
মঙ্গলবার দুপুরে শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধিদল তাদের দাবি আদায়ে গিয়েছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। পরে শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা শেষে মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব এস এম মাসুদুল হক আন্দোলনস্থলে আসেন।
মাসুদুল হক বলেন, ইবতেদায়ি শিক্ষকদের ছয় দফা দাবি নীতিগতভাবে গ্রহণ করেছে মন্ত্রণালয়। এটি নিয়ে কাজ চলছে। শিক্ষকদের সব দাবি পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন হবে। এর সঙ্গে আরো বিষয়ও যোগ করা হয়েছে।
এর আগে দুপুর ২টার মধ্যে দাবি বাস্তবায়নের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না এলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন শিক্ষকরা।
আন্দোলনরত শিক্ষকদের দাবি, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নীতিমালা মেনে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হলেও তাদের কোনো ইবতেদায়ি মাদরাসা এখন পর্যন্ত জাতীয়করণ করা হয়নি। এ অবস্থায় দাবি মানা না হলে রাজপথ না ছাড়ারও হুঁশিয়ারি দেন তারা।
এর আগে, রোববার (২৬ জানুয়ারি) একই দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে যাত্রাপথে শাহবাগ থানার সামনে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন ইবতেদায়ি শিক্ষকরা। একপর্যায়ে পুলিশ শিক্ষকদের ওপর জলকামান নিক্ষেপ করে এবং তাদের লাঠিপেটা করে। এতে এক নারীসহ ছয়জন আহত হন।
শিক্ষকরা বলেছেন, প্রাথমিক স্কুলের মতো সব বিধি-বিধান মেনেও মাদরাসা শিক্ষকেরা চার দশক ধরে বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত সব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় জাতীয়করণ ঘোষণা করতে হবে।
শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, তাদের অবস্থান চলবে ও ঘোষণা না পাওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না। জাতীয়করণের ঘোষণা ছাড়া রাজপথ ছাড়বেন না ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষকেরা।
বক্তারা বলেন, আমরা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ন্যায় সরকারি বিধি-নিয়ম অনুসরণ করে গত ৪০ বছর বিনা বেতনে শিক্ষকতার পেশায় দায়িত্ব পালন করে আসছি। কিন্তু সামান্য অনুদানের টাকা নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে একই পরিপত্রে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকদের ৫০০ টাকা সরকারিভাবে অনুদান দেয়া হয়। পরবর্তীতে ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়। বাকি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের জাতীয়করণ তো দূরের কথা, এ পর্যন্ত একটি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসাও এমপিওভুক্তির আওতায় আনা হয়নি।