
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) ছাত্রদলের নতুন কমিটি নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি সম্প্রতি ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি আংশিক কমিটি ঘোষণা করেছে, যার সভাপতি করা হয় নূর ইসলামকে। তবে তার ছাত্রত্ব নেই। কারণ, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে এমবিবিএস শেষ করে তিনি এখন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে কর্মরত। এই নিয়োগে ছাত্রদলের ভেতরে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
এছাড়াও নূর ইসলামের অতীত রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, এর আগে বিভিন্ন ছবিতে তাকে ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা গেছে। একাধিক ছবিতে তিনি সাবেক সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের মেয়ে ও ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি আনিকা ফারিহা জামান অর্ণার সঙ্গে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। এবাদেও, ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে তাকে শ্রদ্ধা নিবেদন, মিছিল এবং অন্যান্য দলীয় কার্যক্রমে দেখা গেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, নূর ইসলাম সরাসরি ছাত্রলীগের কোনো পদে না থাকলেও ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং নুরুন্নবী হলে ছাত্রলীগের ‘দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা’ হিসেবে গণ্য হতেন। তিনি ছাত্রলীগের নিয়মিত কর্মসূচিতে অংশ নিতেন। ফলে, ছাত্রদলের অনেক নেতাকর্মী তার নিয়োগে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
রামেক ছাত্রদলের এক নেতা জানান, নূর ইসলাম অতীতে ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ছিলেন এবং তিনি ছাত্রলীগের পদ পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। অন্যদিকে, ছাত্রদলের অনেক নেতা মনে করছেন, ছাত্রলীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও তাকে সভাপতি করায় সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নূর ইসলাম বলেন, ‘প্রথম বর্ষে থাকার সময় আমাকে জোর করে ছাত্রলীগের কয়েকটি কর্মসূচিতে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমি ছাত্রলীগ করিনি। আমি অনেকদিন ছাত্রদলের সঙ্গে কাজ করেছি। জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছি এবং সংগঠনকে সুসংগঠিত করেছি। এ কারণেই আমাকে সভাপতি করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, সরাসরি ছাত্রদলের কোনো পদে না থাকলেও বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন তিনি। মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি আকবর আলী জ্যাকি বলেন, রামেক ছাত্রদল মহানগরের অধীনে নেই। তাই, তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জানি না।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, নূর ইসলামের ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠার পর আমরা তদন্ত করেছি। দেখা গেছে, তাকে জোর করে কিছু কর্মসূচিতে নেওয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি অনেকদিন ধরেই ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
এই বিতর্কের মধ্যেই ছাত্রদলের ভেতরে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। সংগঠনের একাংশ মনে করছে, নূর ইসলামের অতীত রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ছাত্রদলের ভাবমূর্তির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, নূর ইসলাম সংগঠনের জন্য কার্যকর নেতৃত্ব দিতে পারবেন।