ঢাকা মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল ২০২৫ , ১৭ চৈত্র ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

দুই ঘণ্টায় বেতন তুলতে শিক্ষকদের সীমাহীন ভোগান্তি, তীব্র ক্ষোভ  

শিক্ষা

আমাদের বার্তা প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১:১০, ২৮ মার্চ ২০২৫

আপডেট: ২৩:১১, ২৮ মার্চ ২০২৫

সর্বশেষ

দুই ঘণ্টায় বেতন তুলতে শিক্ষকদের সীমাহীন ভোগান্তি, তীব্র ক্ষোভ  

সকালে ব্যাংকে গিয়ে দেখা গেলো লম্বা লাইন ধরে শিক্ষক-কর্মচারীরা দাঁড়িয়ে আছেন। এক শিক্ষক বললেন, ‘টাকা না তুলতে পারলে আমাদের পক্ষে ঈদের কেনাকাটা করা সম্ভব না। এজন্য প্রচুর ভিড় ঠেলেও টাকা তুলতে হচ্ছে। সবাই রাত জেগে খুব ভোরে ব্যাংকে চলে এসেছেন।’ 

শুক্রবার নেত্রকোনায় বেতন ও উৎসব ভাতা তুলতে গিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের ভিড় ছিলো চোখে পড়ার মতো। বরিশাল ও রাজশাহীতে রাষ্ট্রায়ত্ত চারটি ব্যাংকের শাখাগুলোতে ছিলো একই চিত্র। শুধু নেত্রকোনা ও রাজশাহীই নয়, গতকাল শুক্রবার এমন চিত্র ছিলো সারা দেশের ব্যাংকের শাখাগুলোতে। 

জানা গেছে, বেতন ও উৎসব ভাতা তুলতে সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের। ফলে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে তাদের মধ্যে। কারণ ব্যাংকে লেনদেন হয়েছে মাত্র দুই ঘণ্টা। এই সংক্ষিপ্ত সময়ে অনেক কষ্ট করে বেতন তুলেছেন তারা। 

অনেক শিক্ষক বেতন ও উৎসব ভাতা তুলতে পারেননি। তাদের অভিযোগ, বিভিন্ন ব্রাঞ্চে ১৫ হাজার টাকা বেশি দেয়নি। যে শাখায় অ্যাকাউন্ট ওই শাখা ছাড়া টাকা তোলা যাবে না। এমন অনেক অসহযোগিতাসহ নানাবিধ কারণে অনেক শিক্ষক বেতন- উৎসব ভাতা পারেনি।

রাজশাহী নগরের রানীবাজার গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষক আরামুল হক জানান, এতো সকালে এসেও তিনি চেক জমা দিতে পারেননি। একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিরিনা পারভীনও চেক জমা দিতে পারেননি। তিনি দুঃখ করে বলেন, ‘২৭ রমজানের রাত গেলো, মানুষ রাত জেগেছে। তারপর সাতসকালে উঠেই দৌড়ে এসেছি ব্যাংকে। এটা একটা কাজ!’

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার মোহনগঞ্জের একজন শিক্ষক বলেন, ‘মানুষের সঙ্গে নাটক করা হচ্ছে। এখন কথা বলেই আর কী করবো?’ 

বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার বাইশারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সহকারী অধ্যাপক খান মোহাম্মদ আল আমিন দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, ‘অনেক কষ্টে ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে পেরেছি। শিক্ষক হওয়ায় আমাদের এতো ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সরকারি কর্মকর্তারা অনেক আগেই বেতন ও উৎসব ভাতা পেয়েছেন।’ 

নেত্রকোনার শিক্ষক ও কর্মচারীরা জানান, দুইঘণ্টা ব্যাংক খোলা রাখায় অনেক কষ্ট হয়েছে। সারাদেশে বেসরকারি স্কুল কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা উত্তোলন করতে ইএফটি সিস্টেম চালু করা হচ্ছে। এতে করে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা অনেকের বকেয়া পড়েছিলো। 

জেলার বারহাট্টা উপজেলার বাউসী অর্ধচন্দ্র উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পিন্টু তালুকদার দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানান, শিক্ষকদের বেতন-ভাতা উত্তোলন করতে শুক্রবার ব্যাংক খোলা রাখাতে সুবিধা হয়েছে। নাহলে ঈদের কেনাকাটা করা তাদের পক্ষে সম্ভব ছিলো না। তবে এজন্য প্রচুর ভিড় ঠেলে টাকা তুলতে হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্যাংক কর্মকর্তা জানান, কষ্ট হলেও ছুটির দিনে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার জন্য কাজ করেছি এই ভেবে যে, শিক্ষক-কর্মচারীরা টাকা উত্তোলন করতে পারায় আসন্ন ঈদের কেনাকাটা করতে পারবেন।

প্রসঙ্গত, বেতন ও উৎসব ভাতা না পাওয়ায় স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হলে শেষ সময়ে এসে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় একদিন অতিরিক্ত ব্যাংক খোলা রাখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রায়াত্ত চারটি ব্যাংক শুক্রবার দুইঘণ্টা খোলা রাখা হয়। তবে, প্রশাসন ক্যাডার পরিচালিত মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরাধীন শিক্ষক-কর্মচারীরা তুলনামূলক কম হয়রানির শিকার হয়েছেন। উৎসব ভাতার টাকা তারা তুলতে পেরেছেন অনেকেই।

জনপ্রিয়