
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পূর্ব বেগুনবাড়ির নতুনপাড়া গ্রামে ‘নতুন পাড়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা’ নামে একটি ভুঁইফোড় প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা বিতর্ক। জাতীয়করণের জন্য শুরু হয়েছে দৌঁড়ঝাপ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বোরো জমিতে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে তড়িঘড়ি করে তৈরি হচ্ছে ঘর। টাঙানো হয়েছে সাইনবোর্ড তাতে লেখা আছে ‘প্রতিষ্ঠা ১৯৮১’।
এলাকাবাসীর দাবি, এটি আসলে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয় বরং সরকারি সুযোগ-সুবিধা আদায়ের উদ্দেশ্যে এক ধরণের জালিয়াতি। তারা বলছেন, ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দে একই নামে এই এলাকায় একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা পরে দাখিল মাদরাসার সাথে একীভূত হয় এবং এমপিওভুক্ত হয় ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে। এখন একই নাম ব্যবহার করে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে আরেকটি ‘মাদরাসা’ প্রতিষ্ঠা করে জাতীয়করণের জন্য দৌড়ঝাড় শুরু করছে একটি চক্র।
অভিযোগ আছে, নতুন করে গড়ে ওঠা মাদরাসার প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিজেকে দাবি করছেন স্থানীয় শাহিনুর আলম নামের এক ব্যক্তি। শিক্ষক তালিকায় রয়েছেন স্থানীয় পূর্ব বেগুনবাড়ি দাখিল মাদরাসার সুপার আব্দুল মতিনের ভাতিজা, শ্যালিকা। অথচ সেখানে কোনো শিক্ষার্থী বা নিয়মিত পাঠদান কার্যক্রম নেই বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা সালাম আহমেদ বলেন, নতুন পাড়া গ্রামের ‘মোরশেদ আলম ও তার স্ত্রীকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে জমি লিখে নিয়েছে চক্রটি। এখন সেখানে ঘর উঠানো হচ্ছে।
বেলাল উদ্দিন নামের আরেকজন বলেন, ধানের জমিতে ভেকু চালিয়ে মাটি কেটে ঘর বানানো হয়েছে। এ ধরনের অসৎ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ’দ্রুত ব্যবস্থা চায় এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা ইতোমধ্যে এ গায়েবি প্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবি জানিয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন। এমনকি শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। তাদের দাবি, ভুয়া প্রতিষ্ঠানটি বাতিল করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
জহির হোসেন নামে একজন বাসিন্দা বলেন, এভাবে যদি একের পর এক ভুয়া মাদরাসা গড়ে ওঠে, তাহলে আসল প্রতিষ্ঠানগুলো সংকটে পড়বে।
ঠাকুরগাঁও জেলা শিক্ষা অফিসার শাহীন আকতার বলেন, আমরা সরেজমিনে গিয়ে শুধু ফসলি জমি পেয়েছি, কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পাইনি।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, নতুন পাড়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা নামে একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।