
নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ স্লোগানে ১৪৩২ সনের বাংলা নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রা শেষ হয়েছে। বর্ষবরণের এই শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছিল কৃষক ও রিকশাচালক শ্রেণির প্রতিনিধিরা, যা ছিল আয়োজনের একটি মানবিক ও ব্যতিক্রমী দিক।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৯টায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাটি চারুকলার সামনে থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় ঘুরে টিএসসি মোড়, শহীদ মিনার, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র, দোয়েল চত্বর হয়ে বাংলা একাডেমির সামনের রাস্তা দিয়ে পুনরায় চারুকলা অনুষদে গিয়ে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শোভাযাত্রায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সংস্কৃতিকর্মী ও সাধারণ মানুষের পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী পোশাকে অংশ নেন কৃষক ও রিকশাচালক প্রতিনিধিরা। তারা ‘নববর্ষ হোক সবার’সহ নানা বার্তা সংবলিত প্ল্যাকার্ড বহন করেন।
কৃষক দলের প্রতিনিধিরা সাদা লুঙ্গি, গেঞ্জি, মাথায় মাথাল, হাতে কাচি বা মাছ রাখার খালই, কুলা, চালুনিসহ বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী সরঞ্জাম প্রদর্শন করেন। অন্যদিকে রিকশাচালকরা তাদের রিকশা সাজিয়ে মাথায় নতুন গামছা বেঁধে অংশ নেন।
শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন, কৃষক ও রিকশাচালক প্রতিনিধি, নারী ফুটবলার এবং ২৮টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
শোভাযাত্রায় অংশ নেয় বিদেশিরাও। তাদের মধ্যে কেউ গলায় বাঁশি ঝুলিয়ে বাজাচ্ছেন, কেউ আবার লাল-সাদা শাড়ি-পাঞ্জাবিতে বাঙালিয়ানা সাজে সেজেছেন। বাঙালির ঐতিহ্যবাহী এই উৎসবে অংশ নিয়ে বিদেশি পর্যটকদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
শোভাযাত্রা বর্ণিল মুখোশ, রঙিন পোস্টার, প্ল্যাকার্ড ও ঐতিহ্যবাহী সাজসজ্জায় উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে এতে ফিলিস্তিনের পতাকা ও প্রতীকী মোটিফ যেমন- তরমুজের ফালি ব্যবহৃত হয়।
এবারের শোভাযাত্রায় ৭টি বড়, ৭টি মাঝারি ও ৭টি ছোট মোটিফসহ মোট ২১টি শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হয়। মূল মোটিফ ছিল ‘স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি’। এ ছাড়াও শোভাযাত্রায় পায়রা, মাছ, বাঘ এবং আলোচিত ‘মুগ্ধর পানির বোতল’-এর শিল্পরূপ প্রদর্শিত হয়।