
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পহেলা বৈশাখের দিনেও সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে একটি স্কুলে চলছে পাঠদান। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারের বিভিন্ন দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) বৈদ্যেরবাজার নেকবর আলী (এনএএম) পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে সকাল থেকেই ষষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে দেখা গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ বৈদ্যেরবাজার নেকবর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেস পরিহিত অবস্থায় বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষে ষষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত চলছে পাঠদান কর্মসূচি। উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহসভাপতি অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন হাতে বেত নিয়ে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাইমুনা ইসলাম জানান, আমাদের শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে আসতে বললে তো আসতেই হবে। আমাদের ক্লাস করানো হবে বলে বই-খাতা নিয়ে আসার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আগামী বছর আমাদের এসএসসি পরীক্ষা তাই শিক্ষকরা ক্লাস করানো হবে বলে জানিয়েছেন।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান জানান, রোববার শিক্ষকরা ক্লাস করানো হবে জানিয়ে আমাদের বই-খাতা নিয়ে স্কুলে আসতে বলেছে তাই আজকে আসছি।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক বশির উদ্দিন জানান, বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ ও প্রধান শিক্ষকের নির্দেশনায় শিক্ষার্থীদের ক্লাস করানো হচ্ছে। এখানে আমরা চাকরি করি তাই তাদের নির্দেশনা পালন করতে হবে। ক্লাস করানোর সময় আরেকজন শিক্ষক জানান, এবার বই দিতে অনেক বিলম্ব হয়েছে। তাই ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনায় পিছিয়ে রয়েছে। এজন্য আজকে ক্লাস করানোর নিয়ম না থাকলেও শিক্ষার্থীদের নিয়ে এসে ক্লাস করানো হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন বলেন, যেহেতু বিদ্যালয়টি বর্তমানে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্র তাই বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ থাকে। তাই শিক্ষার্থীদের পড়া যেন পিছিয়ে না যায় সেজন্য শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করানো হচ্ছে। এতে তো অপরাধের কিছু নেই।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দেলোয়ার হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা নেই, আপনাদের মাধ্যমেই জানতে পারলাম। এমন একটি দিনে ক্লাস করানো ঠিক হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
প্রসঙ্গত, প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহসভাপতি। তিনি স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার ক্ষমতাকালীন সময় স্কুলে জাল সনদ, বিভিন্ন লাইব্রেরির সঙ্গে বই বাণিজ্যসহ স্কুলে যোগদানের পর থেকে সিন্ডিকেট করে দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম করা, কথায় কথায় শিক্ষার্থীদের অভিভাবক, স্কুলের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, দপ্তরি-আয়াসহ প্রায় সবার সঙ্গেই দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে।