সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মানসম্মত পাঠদান ও শিক্ষার পরিবেশ নিয়ে অভিভাবকদের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অনেক বিদ্যালয়ের নিজস্ব জায়গা বেদখল হয়ে রয়েছে। জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলে ক্লাস। আসবাবপত্র ব্যবহার অনুপযোগী, পয়ঃনিষ্কাশনব্যবস্থা অপর্যাপ্ত, সুপেয় পানির ব্যবস্থা নেই। পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষও নেই অনেক বিদ্যালয়ে। মানসম্মত শিক্ষা ও শিক্ষার পরিবেশ না থাকায় খুব সাধারণ বা নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরা এসব স্কুলে পড়াশোনা করছে।
এদের ঝরে পড়ার হার তুলানমূলক বেশি। সন্তানকে ওইসব বিদ্যালয়ে পাঠাতে চান না অনেক অভিভাবক। এমন বিদ্যালয়ও আছে, যেখানে শ্রেণিকক্ষ ময়লা-আবর্জনায় ভরা থাকে। কোথাও পুরো ভবনই বিবর্ণ। খেলার মাঠ কিংবা অবকাঠামো সংকট চরমে। এমন বাস্তবতায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার মান বাড়ানোসহ ক্লাসমুখী করতে সরকার বিদেশের বিদ্যালয়ের আদলে অত্যাধুনিক ভবন নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয়। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এই স্কুলগুলো নির্মাণ করছে।
আধুনিক সুযোগ-সুবিধা রেখে ওই প্রকল্পের আওতায় তৈরি করা হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রথম পর্যায়ে ঢাকায় নতুন-পুরোনোসহ ৩৫৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন এবং অবকাঠামো উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ঢাকায় বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৩৪২টি। এগুলো সংস্কারের পাশাপাশি উত্তরা ও পূর্বাচলে নতুন আরও ১৪টি অত্যাধুনিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে। প্রতিটি বিদ্যালয় হবে ৬ তলাবিশিষ্ট। খেলার মাঠের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা, শিক্ষারর্থীদের জন্য স্যানিটাইজসম্পন্ন আলাদা ওয়াশরুম। প্রতিটি ভবনই হবে পৃথক আর্কিটেকচারাল ডিজাইনে। ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের হিসাব বলছে, ঢাকা মহানগরীর ৩৪২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ২ লাখ ছাত্রছাত্রী পাঠ গ্রহণ করছে। নতুন ভবন তৈরি হলে এই সংখ্যা দ্বিগুণ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।