পশ্চিমবঙ্গের নাট্যকার, নাট্যব্যক্তিত্ব, অভিনেতা মনোজ মিত্র মারা গেছেন। বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে কলকাতার একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বেশ কয়েক বছর ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার অনলাইনকে অভিনেতার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন তার ভাই সাহিত্যিক অমর মিত্র।
১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দের ২২ ডিসেম্বর বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার ধূলিহার গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মনোজ মিত্র। ওই গ্রামেই শৈশব কেটেছে তার। পরে ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে ১২ বছর বয়সে কলকাতায় চলে যান তিনি। অভিনেতার বাবা অশোক কুমার মিত্র স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে ঢাকায় ভারতের দূতাবাসে চাকরি করেছেন।
১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতার নাট্যমঞ্চে প্রথম অভিনয় করেন মনোজ মিত্র। ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দে সিনেমা জগতে প্রথম পা রাখেন তিনি। অভিনয়ের জন্য সংগীত নাটক একাডেমি পদকসহ নানা পুরস্কার পান তিনি। কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের অধ্যক্ষও ছিলেন এই অভিনেতা।
মনোজ মিত্রের লেখা প্রথম নাটক ‘মৃত্যুর চোখে জল’। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে ‘চাকভাঙা মধু’ নাটক দিয়ে পর্দার সামনে আসেন তিনি। এ ছাড়া মঞ্চনাটক, যাত্রা, আকাশবাণীর নাটকে অবাধ বিচরণ ছিল তার।
মনোজ মিত্রের লেখা উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হলো— ‘চাকভাঙা মধু’, ‘দর্পণে শরৎশশী’, ‘নরক গুলজার’, ‘সাজানো বাগান’, ‘নৈশভোজ’, ‘চোখে আঙ্গুল দাদা’, ‘কাল বিহঙ্গ’, ‘অশ্বত্থথামা’, ‘মেশ ও রাখাল’, ‘অলকানন্দর পুত্রকন্যা’ উল্লেখযোগ্য।
মনোজ মিত্র অভিনয় করেছেন ৫৭টি সিনেমায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘৬১ নম্বর গড়পার লেন’, ‘উমা’, ‘প্রেম বাইচান্স’, ‘অমর সাথি’, ‘ভালোবাসি শুধু তোমাকে’, ‘আগুন’, ‘চক্র’, ‘দত্তক’, ‘হিংসা’, ‘আবির্ভাব’ ও ‘তুফান’।
