সংস্কৃতির বিকাশ ও বিকেন্দ্রীকরনের জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের আটটি বিভাগীয় শহরে কর্মশালাভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণের একটি উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রক্রিয়ার সাথে ঢাকার ও ঢাকার বাইরের সৃজনশীল তরুণ প্রজন্ম যুক্ত হবে এবং দেশের বরেণ্য ও মেধাবী চলচ্চিত্রকারদের কর্মশালায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে চলচ্চিত্র নির্মাণ বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করবে।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটি জানায়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
এদিন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, নবীন এবং প্রশিক্ষিত চলচ্চিত্রকর্মীদের সাথে নিয়ে আমাদের নির্বাচিত আটজন চলচ্চিত্রকার আটটি বিভাগীয় শহর থেকে এ বছর আটটি মাঝারি দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র নির্মাণ করবেন।
এই উদ্দেশ্যে গত ডিসেম্বর মাসে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে একটি সার্চ কমিটি গঠিত হয়। এই সার্চ কমিটির লক্ষ্য ছিল আটজন চলচ্চিত্রকার নির্বাচন করা যারা ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে চলচ্চিত্র বিষয়ক কর্মশালা পরিচালনা করবেন এবং কর্মশালায় প্রশিক্ষিত জনবল নিয়ে আটটি চলচ্চিত্র তৈরি করবেন।’
এই নির্বাচিত পরিচালকগণ হচ্ছেন,
১. অনম বিশ্বাস
২. হুমায়রা বিলকিস
৩. নুহাশ হুমায়ুন
৪. শঙ্খ দাশগুপ্ত
৫. শাহীন দিল রিয়াজ
৬. রবিউল আলম রবি
৭. তাসমিয়াহ্ আফরিন মৌ
৮. মোহাম্মদ তাওকীর ইসলাম
তিনি আরো বলেন, ‘এই আটজন চলচ্চিত্রকার নির্বাচনের জন্য আমাদের সার্চ কমিটি গত দুই মাসে তিনটি অফলাইন এবং একধিক নলাইন সভায় মিলিত হয়। কমিটির সদস্যরা বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখে প্রশিক্ষক-চলচ্চিত্রকারদের নাম প্রস্তাব করেন। সেসব প্রস্তাবনা থেকে এবং ১৬ জনের একটা লং লিস্ট বা লম্বা তালিকা বানানো হয়। তাদের সাথে কমিটি প্রাথমিক আলাপ সম্পন্ন করেন। সেই যোগাযোগ সাপেক্ষে আমাদের লম্বা তালিকায় থাকা চলচ্চিত্রকারদের প্রত্যাশা, আগ্রহ, জেন্ডার, কাজের ধরন এবং সার্বিক পোর্টফোলিও ইত্যাদি বিবেচনায় আটজনের চূড়ান্ত তালিকা করা হয়। আজকে সার্চ কমিটি আপনাদের সামনে আমাদের নির্বাচিত সেই আটজন চলচ্চিত্রকারের নাম প্রকাশ করতে যাচ্ছে, যারা এ বছর সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এই চ্যালেঞ্জিং কিন্তু জনগুরুত্বপূর্ণ এবং সৃজনশীল উদ্যোগের সঙ্গে থাকতে সম্মত হয়েছেন।’
এই উদ্যোগের মাধ্যমে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় দুটি লক্ষ্য অর্জন করতে চাইছে। এক, শিল্পের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শাখা এ নির্মাণ প্রক্রিয়ার সাথে ঢাকার ও ঢাকার বাইরের আগ্রহী তরুণ জনগোষ্ঠীর যোগাযোগ তৈরি করা, এবং কর্মদক্ষতা তৈরি ও প্রতিভা বিকাশের সুযোগ করে দেয়া। দুই, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতাকে বিভিন্ন কাজে লাগানোর জন্য ঐ প্রশিক্ষকদের সাথেই চলচ্চিত্র নির্মাণে অংশগ্রহণ করা।
তিনি জানালেন, এসব কর্মশালা এবং নির্মাণের জন্য কোনো ছক বেধে দেয়া হয়নি। এতে করে শিল্পীরা তাদের নিজস্ব কর্মপদ্ধতি ও সৃজনশীলতা প্রয়োগ ঘটাতে সমর্থ হবেন এবং শৈল্পিক, রাজনীতিমনস্ক, বৈপ্লবিক এবং তারুণ্যমন্ডিত শিল্পভাষা তৈরিতে আরও স্বচ্ছন্দ হবেন বলে আমাদের বিশ্বাস। বিশেষ করে, যে দীর্ঘ দুঃসময় আর রক্তস্নাত জুলাই বিপ্লব। বাংলাদেশের মানুষ এখন স্বাধীনভাবে নিঃশ্বাস ফেলছে, তার একটি শৈল্পিক ভাষ্য এসব চলচ্চিত্রে দেখা যাবে বলে আমরা আশা করি।
‘এই প্রতিভাবান ও বরেণ্য পরিচালকবৃন্দের অংশগ্রহণে চলচ্চিত্রশিল্পকে ব্যাপকভাবে সাফল্যমণ্ডিত করবে। পরবর্তীতে এসব কর্মশালা থেকে উঠে আসবে সফল চলচ্চিত্রনির্মাতা।’
সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা আরো বলেন, এই প্রজেক্টের মাধ্যমে আটটি বিভাগে ওয়ার্কশপ উন্মাদনা তৈরি হবে। এই ওয়ার্কশপের মাধ্যমে সারা দেশ থেকে ভবিষ্যতে অনেক ভালো ভালো পরিচালক উঠে আসবে। তারা একদিন বাংলাদেশের সিনেমায় অবদান রাখবে।
চলচ্চিত্র প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণের আবেদন করতে এখানে ক্লিক করুন