ঢাকা সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫ , ২৩ চৈত্র ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

পাবনায় মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের জন্মবার্ষিকী উদযাপিত

বিনোদন

প্রকাশিত: ১৬:৫২, ৬ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট: ১৭:১৮, ৬ এপ্রিল ২০২৫

সর্বশেষ

পাবনায় মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের জন্মবার্ষিকী উদযাপিত

‘তুমি যে আমার ওগো তুমি যে আমার 
রাত ঘুম ঘুম ঝিকিমিকি তারা
এই মাধবী রাতে আসেনি
কেউ কভু আর জীবনে আমার…’ 

এ রকম মৃদু সুরে গান চলছে সুচিত্রা সেনের ঘরে। অন্যদিকে তারই আঙিনায় ফুলের বাগানে উদযাপিত হচ্ছে জন্মদিনে কেক কাটা ও আলোচনা সভা।  এ রকম এক পরিবেশে রোববার (৬ এপ্রিল) পাবনায় বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের ৯৪তম জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। 

১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দের ৬ এপ্রিলের এই দিনে পৃথিবীর মুখ আলো করে পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন সূচিত্রা সেন।  এ উপলক্ষে রোববার সকাল ১১টায় পাবনা শহরের হেমাসাগর লেনে সুচিত্রা সেনের পৈতৃক বাড়িতে সুচিত্রা সেনের ভাস্কর্যে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও কেক কেটে জন্মদিন উদযাপন করে ‘সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ’সহ পাবনার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন। 

সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. রামদুলাল ভৌমিকের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন, সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নরেশ মধু, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ফরিদুল ইসলাম খোকন, ফজলুল হক সুমন প্রমুখ।

তৎকালীন বৃহত্তর  পাবনা শহরের গোপালপুর মহল্লার হেমসাগর লেনের একতলা পাকা পৈত্রিক বাড়িতে সুচিত্রা সেনের শিশুকাল, শৈশব ও কৈশোর কেটেছে। তাঁর বাবা করুনাময় দাশগুপ্ত পাবনা মিউনিসিপ্যালিটির স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদে চাকরি করতেন। মা ইন্দিরা দাশগুপ্ত ছিলেন গৃহিণী দু্ই বোনের মধ্যে সুচিত্রা সেন ছিলেন বড়। ছোট বোন হেনা দাশগুপ্ত। শহরের মহাকালী পাঠশালায় (বর্তমানে টাউন গার্লস হাইস্কুল) পড়ালেখা শেষে সুচিত্রা সেন স্থানীয় পাবনা বালিকা বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। 

পড়ালেখায় খুব একটা মনোযোগী ও মেধাবী না থাকলেও গান, নাটক, অভিনয় প্রিয় ও পছন্দের ছিল সূচিত্রা সেনের। পাবনা শহরের নানা অনুষ্ঠানে গান গাওয়া ও নাটক থিয়েটারে তিনি অভিনয়ে দক্ষতা দেখান। পাবনার উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে রমা বনেদি পরিবারের বধূ হয়ে ঘরসংসারের পাশাপাশি সিনেমায় অভিনয়ে জড়িয়ে পড়েন। বিয়ের আড়াই বছরের মাথায় ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে ‘শেষ কোথায়’ নামের একটি বাংলা ছবিতে তিনি প্রথম অভিনয় করেন। পরে অজ্ঞাত কোনো কারণে ছবিটি আর মুক্তি পায়নি।

 এরপর ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে নায়িকা হয়ে সুচিত্রা সেন অভিনীত প্রথম ছবি ‘সাত নম্বর কয়েদি’ ছবিটি মুক্তি পায়। ১৯৫৩ থেকে ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ৩৫ বছর সুচিত্রা সেন একটানা বাংলা সিনেমায় অভিনয় করেন। স্বামী দিবানাথ সেনের প্রবল আপত্তি থাকলেও সুচিত্রা সেন মনের তাগিদে নিজেকে অভিনয়ে জড়িয়ে রাখেন। ‘সাত নম্বর কয়েদি’ ছবির পরিচালক ছিলেন সুকুমার দাশগুপ্ত। তারই একজন সহকারী পরিচালক নীতিশ রায় এ ছবিতে অভিনয় করার পর ছবি মুক্তির সময় রমা নাম বদলে নাম দেন ‘সুচিত্রা সেন’। 

এরপর থেকেই কিশোরী বেলার বান্ধবীদের রমা বাবা-মায়ের দেওয়া নাম রমা দাশগুপ্ত থেকে স্বামীর পদবি নিয়ে রমা সেন সবশেষে স্বপ্নসুন্দরী সুচিত্রা সেন হয়ে যান। 

সুচিত্রা সেন বাংলা ৫৬টি ও ৭টি হিন্দি মিলে মোট ৬৩টি ছবিতে নায়িকা হয়ে অভিনয় করেছেন। উত্তম কুমারের সঙ্গে জুটি হয়ে বিশ্বে ব্যাপক আলোড়ন তোলেন। ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে উত্তম কুমার মারা গেলে সিনেমায় অভিনয় বন্ধ করে দেন তিনি। ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে ‘সাত পাকে বাঁধা’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবে সুচিত্রা সেন ‘সিলভার প্রাইজ ফর বেস্ট অ্যাক্ট্রেস’ জয় করেন। 

তিনিই প্রথম ভারতীয় অভিনেত্রী যিনি কোনো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত হয়েছিলেন। ভারত সরকারও তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মান প্রদান করেন।  ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে তাঁকে ‘দাদা সাহেব ফালকে’ পুরস্কার দেওয়ার প্রস্তার রাখলে জনসমক্ষে আসতে চাননি বলে তা গ্রহণ করেননি সুচিত্রা সেন। ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সব্বোর্চ সম্মান ‘বঙ্গবিভূষণ’ দেওয়া হয়। ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে সুচিত্রা সেন ‘দেবদাস’ ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতেন, যা ছিলো তাঁর প্রথম হিন্দি ছবি।

সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. নরেশ চন্দ্র মধু বলেন, মহানায়িকার জন্মদিনে সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের উদ্যোগে কেক কাটাসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া পাবনার আরো কয়েকটি সংগঠন কেক কাটাসহ নানা কর্মসুচি হাতে নিয়েছে।

জনপ্রিয়