
গেলো বছর ৫ই আগস্ট ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছাড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত করা হয় তাকে এবং আওয়ামীপন্থীদের।
এবার আন্দোলনে নিহত বিএনপিকর্মী মাহফুজ আলম শ্রাবণ হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনা, অভিনেতা ইরেশ জাকেরসহ ৪০৮ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জানা যায়, নিহতের ভাই মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পী গত ২০ এপ্রিল ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার আবেদন করেন।
ওইদিন আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করে অভিযোগটি মিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জকে নিয়মিত মামলা হিসেবে নেওয়ার নির্দেশ দেন।
মামলায় সাবেক এমপি-মন্ত্রী, ঢাকার সাবেক দুই মেয়র, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, নির্বাচন কমিশনার, আইনজীবী, অভিনেতাসহ ৪০৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। মামলায় অভিনেতা ইরেশ যাকের ১৫৭ নম্বর এজাহার নামীয় আসামি। মামলার এজহারে নিহতের বড় ভাই উল্লেখ করেন, আমার ছোট ভাই মাহফুজ আলম শ্রাবন (২১) বিএনপির দলীয় কর্মী। সে রেনেটা কোম্পানিতে ক্যাজুয়াল হিসাবে ৬ মাস ধরে চাকরি করতেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরুর পর থেকে বিভিন্ন সময় ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে ছাত্রদের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দিতো সে। গত ৫ আগস্ট দুপুর আড়াইটার সময় ছাত্র জনতার মিছিল মিরপুর শপিং কমপ্লেক্স ও মিরপুর মডেল থানার মাঝের রাস্তা দিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে যাওয়ার সময় আসামিদের নির্দেশে দলটির পাঁচ শতাধিক নেতা কর্মী একত্রে শান্তিপূর্ণ মিছিলে আক্রমণ চালায়। তারা সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ার সেল, রাবার বুলেট, রাইফেল, শট গান, পিস্তলের গুলি করে এবং ককটেল ও হাত বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।
বাদী আরও উল্লেখ করেন, সংঘবদ্ধ আসামিদের গুলি বর্ষণের ফলে শ্রাবনের বুকের বাম পাশে গুলি লাগে, যা ডান পাশের কোমর ছিদ্র হয়ে বের হয়ে যায়। গুলির আঘাতে তাৎক্ষণিক রক্তাক্ত অবস্থায় সে মিরপুর মডেল থানার গেটের সামনের রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে। এসময় শ্রাবনসহ অনেকেই ঘটনাস্থলে আসামিদের নিক্ষিপ্ত গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়। তখন সেখানে উপস্থিত ছাত্র-জনতা গুলিবিদ্ধ শ্রাবনকে চিকিৎসার জন্য মিরপুরের একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।