রংপুরের পীরগাছার পাঠক শিকড় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নানা অনিয়মের মাধ্যমে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করায় হাইকোর্ট অবৈধ ঘোষণা করা হয়। সেই কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে এবার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের অভিযোগ উঠেছে।
এর মধ্যে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে নাজমা খাতুন নামে এক শিক্ষক ওই বিদ্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন। প্রতারণার মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের নামে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিতেই এমন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে বলে বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাসহ অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
অভিযোগে জানা গেছে, গত ৫ জুলাই বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক বিধান চন্দ্র রায় চাকরি থেকে অবসরে যান। মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত শিক্ষামন্ত্রণালয় ও মাউশি'র পরিপত্র অনুযায়ী প্রধান শিক্ষকের পদ শুন্য হলে সহকারী প্রধান শিক্ষকই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করবেন। ওই প্রতিষ্ঠানে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে নাজমা খাতুন বিদ্যমান থাকলেও সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে জুনিয়র একজন সহকারী শিক্ষককে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব হস্তান্তরের চেষ্টা চলছে।
এর আগে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে পাঠক শিকড় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে গোপনে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করেন তৎকালীন প্রধান শিক্ষক। ওই কমিটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন শিক্ষার্থীর অভিভাবক শহিদুল্লাহ কাওছার রুবেল। চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর ম্যানেজিং কমিটিকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন আদালত।
এদিকে হাইকোর্টের রায় অমান্য করে সেই ম্যানেজিং কমিটি বিদ্যালয়ের ছয় নম্বর জুনিয়র সহকারী শিক্ষক মোশারফ হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেন। তার দায়িত্বকে বৈধতা দেয়ার জন্য একজন জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
অপর তিনজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষকের স্বাক্ষর জাল করে অনাপত্তিপত্র তৈরি করা হয়। ঘটনাটি ফাঁস হলে স্বাক্ষর জালের বিষয়টি ইউএনওসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক দপ্তরে অভিযোগ করেন জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষকরা।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৭ সেপ্টেম্বর রংপুরের একটি দৈনিকে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তিতে সভাপতি বরাবর আগ্রহী প্রার্থীদের আবেদনপত্র পাঠাতে বলা হয়েছে।
ওই বিদ্যালয়ের বর্তমানে কর্মরত সহকারী প্রধান শিক্ষক নাজমা খাতুন বলেন, ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে এই বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পেয়ে নিয়মিত পাঠদান করে আসছি। প্রতারণার উদ্দেশে আমার পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষিত ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল জব্বারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হক সুমন বলেন, বিষয়টি যেহেতু সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত গেছে, তাই আদালতের নির্দেশনা পেলে আমরা তা বাস্তবায়ন করবো।