একেক দেশের বিমানবন্দরে একেক নিয়মাবলি থাকে। কিন্তু বলা যায়, সব বিমানবন্দরের সিকিউরিটি চেকিং প্রক্রিয়াই কিছুটা মন্থর এবং ক্লান্তিকর। একটু কৌশলী হলে বিমানবন্দরেও দ্রুত চেক-ইন ও সিকিউরিটি চেকিং সম্পন্ন করা যায়। বিশেষ করে পোশাক আর অনুষঙ্গ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিচক্ষণতা দেখালে অনেকখানি সময় সাশ্রয় করা যায়। জেনে নিন টিপস।
পোশাকে সতর্কতা
গন্তব্য কাছে হোক বা দূরে, বিমানবন্দরের জন্য আউটফিট বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আরামকে অবশ্যই প্রাধান্য দিতে হবে। তবে ভারী ও ওভারসাইজড জ্যাকেট, হুডি, জাম্পস্যুট বা একাধিক পকেট দেওয়া ট্রাউজার্সের মতো পোশাক এড়িয়ে যাওয়া ভালো। কারণ নিরাপত্তা চেকিংয়ে যেভাবে স্ক্যান করা হয়, সে সময়ে এমন পোশাক পরলে খানিকটা অসুবিধা হতে পারে। এখন আবার চল লেয়ারিংয়ের। অর্থাৎ কয়েক স্তরে পোশাক পরা। এমন পোশাকও চেকিংয়ে বিলম্বের কারণ হতে পারে।
আবার অনেকেই ভ্রমণের সময় জিন্স পরতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কিন্তু দীর্ঘ বিমানযাত্রায় অনেক সময় রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাই জিন্স বা আঁটসাঁট পোশাক বিমানযাত্রায় এড়িয়ে চলাই ভালো।
ল্যাপটপ ব্যাকপ্যাক
বিমান ভ্রমণের ক্ষেত্রে হ্যান্ড ক্যারি হিসেবে একটি ল্যাপটপ ব্যাকপ্যাক নিতে পারেন। একাধিক কম্পার্টমেন্ট থাকায় ভ্রমণে প্রয়োজনীয় সবকিছু এতে গুছিয়ে রাখা যায়। তা ছাড়া ল্যাপটপের জন্য ডিজাইনকৃত হওয়ায় এ ধরনের ব্যাকপ্যাক বেশ টেকসই হয়। ফলে ঝাঁকুনির আশঙ্কা থাকে না; মুঠোফোন, হেডফোন থেকে শুরু করে সব ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইজ এতে নিশ্চিন্তে রাখা যায়।
আরামদায়ক জুতা
মুখবন্ধ জুতা পরা থাকলে সিকিউরিটি চেকিংয়ের সময় তা খুলে রেখে আবার পরতে হয়। আবার ইমিগ্রেশন এবং আনুষঙ্গিক কার্যাদি সারার জন্য বিমানে চড়ার অন্তত তিন ঘণ্টা আগে এয়ারপোর্টে যাবার পরামর্শ দেওয়া হয়। গেট থেকে বিমান পর্যন্ত পৌঁছাতে অনেকটা পথ হাঁটতে হয়। তাই পাতলা স্যান্ডেল পরে বিমানবন্দরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত একেবারেই ঠিক হবে না।
গন্তব্যস্থলে পৌঁছেও প্রচুর হাঁটতে হতে পারে। তাই এমন জুতা বেছে নিন যা হালকা হবে, সহজে খোলা যাবে, আবার সোল বা গ্রিপ মজবুত হবে। নাহলে শুধু চেকিং নয়, গোটা ভ্রমণটাই যন্ত্রণাদায়ক হয়ে উঠতে পারে।
স্বচ্ছ প্রসাধনী ব্যাগ
বিমানে তরল দ্রব্যাদি হ্যান্ড লাগেজে বহন করার অনুমতি নেই। লিকুইড ওষুধ, ছোট পারফিউম ইত্যাদির ক্ষেত্রে অবশ্য কিছুটা শিথিলতা রয়েছে। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই আপনাকে সবকিছু মূল লাগেজে রাখতে হবে। শ্যাম্পু, বডি ওয়াশ থেকে শুরু করে টোনার, লোশন ইত্যাদি একটি স্বচ্ছ প্লাস্টিক ব্যাগে করে লাগেজে রেখে দিন। আর এই স্বচ্ছ প্রসাধনী ব্যাগটি রাখুন লাগেজের একেবারে ওপরের দিকে।
এতে সিকিউরিটি চেকিংয়ের সময় সকলের সামনে লাগেজ খুলে দেখানোর বিড়ম্বনা থেকে রক্ষা পাবেন। আবার পানিরোধী হওয়ায় কাপড়চোপড়ের ওপর কিছু ছড়িয়েও পড়বে না।
ধাতব অনুষঙ্গ ও সুগন্ধি
বিমান ভ্রমণের সময় ধাতব অনুষঙ্গের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। এ সময় গলায়, হাতে বা চুলে ধাতব কিছু থাকলেই চেকিংয়ের ‘মেটাল ডিটেক্টর’-এ আটকাবে। সঙ্গে কোনো ধাতব অলঙ্কার বা অনুষঙ্গ না থাকলে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বলয় সামলানো স্বস্তিদায়ক হবে।
পারফিউম ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বিমান ভ্রমণের সময় কয়েকটি ব্যাপার বিবেচনায় রাখা দরকার। আপনার ব্যবহৃত সুগন্ধির কোনো উপাদান বিমানের যাত্রীদের মধ্যে কারও হাঁপানি বা অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। তার ওপর বিমানের মধ্যে একই বাতাস ক্রমাগত প্রবাহিত হতে থাকে। তাই বিমানযাত্রায় মৃদু সুগন্ধি বেছে নিন।