দাঁত শিরশির করা, মাড়ি ফুলে যাওয়া ইত্যাদি নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে শীতকালে। আর এজন্য ঠাণ্ডা বাতাস নয় বরং দাঁতের স্বাস্থ্যকেই দায়ী করতে হবে।
দাঁতের সঙ্গে পানির সম্পর্ক অনেক গভীর। কারণ সকালে ঘুম থেকে উঠে দাঁত ব্রাশ করা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমানের আগে পর্যন্ত মুখ ধুতে গিয়ে দাঁতের সস্পর্শে আসে পানি। শীতে দাঁত নিয়ে সমস্যায় পড়েনি, এমন মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। আবার একবার যার দাঁতের সমস্যা দেখা দেয়, তাকে সারাজীবন দাঁত নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয়।
বছরের অন্য সময়ে তুলনায় শীতকালে দাঁত নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় বেশি। এর মূল কারণ পানি। অনেকেই এই সময়ে ঠান্ডা পানি পান বা কুলকুচি করলেই দাঁতে শিরশির করে। যাদের এই সমস্যাটি হয়, ধরে নিতে হবে তাদের দাঁতে একটু হলেও সমস্যা আছে।
দন্ত চিকিৎসক পূজা সাহা বলেন, ঠান্ডা কোনো খাবার খেলে দাঁত শিরশির করে। তবে টক বা মিষ্টিজাতীয় খাবার গ্রহণের সময়ও একই ধরনের অনুভূতি হতে পারে। কারও দাঁতের সাদা অংশ এনামেল ক্ষয় হয়ে ডেন্টিন নামের অংশটি যখন বের হয়ে যায়, তখনই দাঁতে ঠান্ডা কিছু লাগলে শিরশির করে।
দন্ত চিকিৎসক পূজা সাহার মতে, অনেকের শীতকালে পানি ব্যবহারের করলে দাঁত শিরশির করে। এই অনুভূতি দাঁতের স্বাভাবিক অবস্থার প্রকাশ। বাইরে যতই ঠান্ডা থাকুক, মুখের ভেতরের তাপমাত্রা সব সময় ৯৮.৪ ডিগ্রি বা তার কাছাকাছি থাকে। তাই ঠান্ডাজাতীয় কিছু মুখে দিলে হঠাৎ তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কারণে দাঁত শিরশির করে ওঠে।’
করণীয়
১. নিয়মিত সঠিক উপায়ে দাঁতের পরিচর্যা করুন। নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করলে দাঁতের ফাঁকে জীবাণু তৈরি হবে না।
২. সকালে নাশতা করার পরে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে দাঁত ব্রাশ করুন।
৩. দাঁত মাজার ক্ষেত্রে শক্ত ব্রাশের পরিবর্তে নরম ব্রাশ ব্যবহার করুন।
৪. টকজাতীয় খাদ্য যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। এতে দাঁতের যন্ত্রণা থেকে রক্ষা পাবেন।
৫. দাঁত জোরে জোরো মাজাবেন না। হালকাভাবে ঘষেই দাঁত পরিষ্কার করুন।
৬. টুথব্রাশ উপরে-নিচে করে ঘষে দাঁত মাজুন। এর ফলে দাঁত ও মাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
৭. দাঁতের সমস্যা বেশি হলে মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক, মাফলার বা স্কার্ফ ব্যবহার করুন।
৮. আইসক্রিম ও কোমল পানীয় কম পান করুন। এতে দাঁত কম শিরশির করবে।
দন্ত চিকিৎসক পূজা সাহা মনে করেন, যারা জোরে দাঁত ব্রাশ করেন বা বেশি সময় নিয়ে ব্রাশ করেন, তাদের দাঁতের মাড়ি সরে গিয়ে দাঁতের গোড়ার দিকে ক্ষয়ে যায়। এতে দাঁত শিরশির করে। এ ক্ষেত্রে সমাধান হলো দাঁত ফিলিং করা। তবে দাঁত নিয়ে বেশি সমস্যায় পড়লে দন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।