বর্তমান প্রজন্মের অধিকাংশ মানুষই স্বাস্থ্য সচেতন। নিজেকে ফিট রাখার জন্য নানাভাবে চেষ্টা চালান তারা। এরপরও অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে স্বাস্থ্য বেড়ে গেলে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। তবে কখনো কখনো ব্যস্ততা কিংবা অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসের কারণে স্বাস্থ্য অতিরিক্ত বেড়ে যায়। আর ঠিক তখনই বাধে বিপত্তি।
স্বাস্থ্য বেড়ে গেলে তা কমানোর জন্য নানা চেষ্টার মধ্যে অন্যতম থাকে চিয়া সিড খাওয়া। যা খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায় বলে বিশ্বাস সবার। অল্প খরচে কার্যকরী ফল পেতে চিয়া সিড এখন ব্যাপক জনপ্রিয়। এরপরও অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে যে, সত্যিই কি চিয়া সিড উপকারী, ওজন কমায়? সম্প্রতি এ নিয়ে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন কলকাতা শহরের বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ কোয়েল পাল চৌধুরী। এবার তাহলে এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
চিয়া সিডের উপকারিতা: চিয়া সিডে ফাইবার, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, জিংক, ভিটামিন বি১, বি২, বি৩ থেকে শুরু করে একাধিক ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে। এসব ভিটামিন ও খনিজ শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি মিটিয়ে ফেলার কাজে পারদর্শী। এই বীজে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের গুণে বিভিন্ন ক্রনিক রোগও দূরে থাকে। এছাড়া হৃৎপিণ্ড, হাড়-সহ শরীরের একাধিক অঙ্গ সুস্থ থাকে।
চিয়া সিড খেলে কি আসলেই ওজন কমে: এই বীজ খুবই উপকারী একটি খাবার। যা নিয়মিত খাওয়ার ফলে অল্প সময়ের মধ্যে ওজন কমে। এতে থাকা উপাদান দীর্ঘসময় পেট ভরিয়ে রাখতে সাহায্য করে। এ জন্য খাওয়ার পর ক্ষুধা পায় না। ফলে দ্রুত ওজন কমে। তাই ওয়েট লস ডায়েটে নিয়মিত চিয়া সিড রাখতে পারেন।
খাওয়ার উপায়: এক গ্লাস পানিতে ১ থেকে ২ চা চামচ চিয়া সিড মিশিয়ে নিতে হবে। অল্প কিছুক্ষণ পরই সেই পানীয় পান করে নিন। আবার চাইলে এই পানীয় বা বীজ দিয়ে শরবত বানিয়েও খেতে পারেন। খাওয়ার ক্ষেত্রে সকালের দিকে নিয়মিত খেলে উপকার পাবেন। আবার চাইলে দুই বেলার খাবার খাওয়ার মধ্যবর্তী সময়েও খেতে পারেন। ওজন কমা ছাড়াও নিজেকে ফিট রাখার জন্য খেতে পারেন চিয়া সিড।
খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন: স্বাস্থ্য স্বাভাবিক রাখার জন্য প্রথমেই ফাস্টফুড খাওয়ার অভ্যাস বাদ দিতে হবে। এমনকি ঘরে তৈরি ভাজাপোড়াও খাওয়া যাবে না। এর পরিবর্তে অল্প তেল, মশলা সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারেন। ফাইবার সমৃদ্ধ ফল, শাক ও সবজি খেতে পারেন। আবার ভাত-রুটির মতো খাবার বেশি খাওয়ার অভ্যাস বাদ দিতে হবে।
অবশ্যই ব্যায়াম: বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত মাত্র ৩০ মিনিটের ব্যায়ামে ঘাম ঝরে এবং এতে স্বাস্থ্যও কমে। এ জন্য এখন থেকেই নিয়ম করে প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে ব্যায়ামের অভ্যাস করুন। হতে পারে তা জিমে গিয়ে কিংবা বাড়িতে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ। আর যদি এসব করতে না পারেন, তাহলে নির্দিষ্ট এই সময় সাইকেল চালানো, হাঁটাহাঁটি কিংবা সাঁতারও কাটতে পারেন। তাতেই উপকার মিলবে।