সকালে স্বাস্থ্যকর খাবার দিয়ে করা উচিত। তবে সকালে উঠে কাজের ব্যস্ততায় অনেকে নাশতা করেন না আর যারা করেন তাদের অধিকাংশ স্বাস্থ্যের বিষয়টি বিবেচনা করেন না। আর শীতের সকালে উঠেই রান্না করা সম্ভব হয় না অনেকের পক্ষ। তাই দেখা যায় পাউরুটি কিংবা বিস্কিট দিয়ে নাশতা করেন যেটা স্বাস্থ্যের জন্য একেবারেই ভালো না।
শরীর এবং মনকে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য স্বাস্থ্যসম্মত খাবার প্রয়োজন। কারণ দিনের শুরুতে একটি পরিপূর্ণ খাদ্য তালিকা সারাদিন সুস্থ ও সতেজ থাকার জন্য জরুরি। তবে শীতের সময় সকালে বেশি সময় থাকে না। তাই কম সময়ে স্বাস্থ্যকর কিছু খাবার দরকার। পুষ্টিবিদরা এমন কিছু খাবারের কথা বলেছেন। হেলথলাইনের এক প্রতিবেদনে এমন কয়েকটি খাবারের কথা উঠে এসেছে।
গ্রিন টি: গ্রিন টিটতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি , বি৫, ডি, ই, সি, ই, এইচ সেলেনিয়াম, ক্রোমিয়াম, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ ও সামান্য ক্যাফেইন। গ্রিন টির উপকারিতা অনেক।
এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্রণে সাহায্য করে, ওজন কমাতে সাহায্য করে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে ও মস্তিষ্ককে উদ্দীপ্ত করে। গ্রিন টি বার্ধক্য এবং কপালের বলিরেখা থেকে রক্ষা করে ত্বককে উজ্জ্বল ও সতেজ রাখে। তবে খাবার খাওয়ার ১ ঘণ্টা আগে অথবা খাবার খাওয়ার ১ ঘণ্টা পর গ্রিন টি পান করা উচিত। খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গ্রিন টি পান করা উচিত নয়। এবং সকালে খালি পেটে গ্রিন টি পান করা উচিত নয়।
ডিম: ডিমকে বলা হয় সুপারফুড। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, ফোলেট, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় খনিজ ও মিনারেল। এছাড়া প্রোটিনের ভাণ্ডারও বলা হয়ে থাকে ডিমকে। ডিমে থাকা প্রোটিন পেশির বৃদ্ধি এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অপরিহার্য।
এছাড়া কুসুমে থাকা লুটেইন এবং জেক্সানথিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখ, ত্বক ও কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন দুইটি ডিম খাওয়াই যথেষ্ট।
ফল: সকালের নাশতায় ফল রাখতে বলেন পুষ্টিবিদরা। কলা, আপেল, কমলা, আঙুর অথবা মৌসুমি ফলমূল দিয়ে সকালের নাস্তা করা সব চাইতে ভালো। বিভিন্ন রোগপ্রতিরোধে ও ওজন কমাতে আঁশজাতীয় খাবার প্রয়োজন। ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি থাকে। ভিটামিন সম্পূর্ণ পেতে তাজা ও কাঁচা ফল খোসাসহ খাওয়াই ভালো। চাইলে ফলমূল দিয়ে সালাদ তৈরি করেও খেতে পারেন।
দই: দইতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, যা হাড়ের গঠনে কাজ করে। দিনের শুরু দই দিয়ে করলে পুরো দিন আপনার দেহে থাকবে অফুরন্ত এনার্জি। ক্লান্তি স্পর্শ করবে না দিনের শেষেও। সুতরাং সকালের নাস্তায় খাবারের পাশাপাশি দই রাখা ভালো। তবে সকালের নাস্তায় শুধু দই খাওয়া স্বাস্থ্যকর নয়।
চিয়া সিড: শরীরের জন্য চিয়া সিড দারুণ উপকারী। চিয়া সিডও একটি সুপারফুড । এতে আছে দুধের চেয়ে ৫ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি, আয়রন, পটাশিয়াম, ওমেগা-৩। এটি শক্তি এবং কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ওজন কমাতে সাহায্য করে, ব্লাড সুগার স্বাভাবিক রাখে, শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয় এবং প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করে। পাশাপাশি হাঁটু ও জয়েন্টের ব্যথা দূর করাসহ ত্বক, চুল ও নখ সুন্দর রাখে।
বেরি জাতীয় ফল: স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, জাম জাতীয় ফলগুলো খুবই পুষ্টিকর। বেরি জাতীয় ফলগুলোতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস থাকে। অ্যানথোসায়োনেনস উপাদানের জন্য রক্তের ইনসুলিন ভারসাম্য ঠিক রাখে ও রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে। প্রাকৃতিক আঁশের ভাণ্ডার বলে এগুলো খেলে হজমশক্তি ঠিক থাকে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য আশঙ্কা থাকে না। তাই সকালে বেরি জাতীয় ফল রাখতে পারেন।
কাঠবাদাম: ভিটামিন ও খনিজে ভরা কাঠবাদাম পানিতে ভেজালে পুষ্টিগুণ অনেক বেড়ে যায়। এটি হজমশক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি ওজন কমাতে কার্যকরী। দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার পর সকালে ৫-১০টি কাঠবাদাম খেলে পুষ্টি জোগানোর পাশাপাশি সারাদিন রুচিও বাড়ায়।