![যে ৭ অভ্যাস স্বাস্থ্য নষ্ট করে দেয় যে ৭ অভ্যাস স্বাস্থ্য নষ্ট করে দেয়](https://www.amaderbarta.net/media/imgAll/2023November/seven-harmful-food-for-health-2502070629.jpg)
আমাদের অভ্যাস আমদের স্বাস্থ্যকে গড়তে পারে, আবার ভাঙতেও পারে। খাবারের পর হাঁটা, ভেজালমুক্ত এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার মতো সহজ অভ্যাসগুলো স্বাস্থ্যকে বদলে দিতে পারে। একইভাবে কিছু বিষাক্ত অভ্যাস আমাদের ধারণার চেয়েও বেশি ক্ষতি করতে পারে। সেগুলো কোনো অপরিচিত অভ্যাস নয়, প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষের এই অভ্যাস রয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন অভ্যাসগুলো স্বাস্থ্য নষ্ট করে দেয়-
১. ক্ষোভ পুষে রাখা
ক্ষোভ পুষে রাখবেন না। অন্যায়ের শিকার হওয়ার পর রাগ এবং তিক্ততা ত্যাগ করা কঠিন হতে পারে। ক্ষোভ পুষে রাখলে তা নেতিবাচক অনুভূতি তৈরি করার পাশাপাশি স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি করতে পারে। এর ফলে হৃদরোগ এবং রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়, উদ্বিগ্ন এবং চাপগ্রস্ত করে, বার্ধক্য প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে এবং সম্পর্কের বন্ধন নষ্ট করতে পারে। সুখ এবং সুস্বাস্থ্যের রহস্য ক্ষমার মধ্যে লুকিয়ে থাকতে পারে। ক্ষোভ ত্যাগ করলে তা আমাদের মানসিক সুস্থতার উন্নতির পাশাপাশি রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে, যা আমাদের শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
২. ডেস্কে দুপুরের খাবার খাওয়া
ডেস্কে দুপুরের খাবার খাওয়া খুবই সহজ, কিন্তু ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে অ্যাপেটাইটে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, বিক্ষিপ্ত অবস্থায় খাওয়ার অভ্যাস ওজন বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত। খাবারের দিকে মনোযোগ দেওয়ার জন্য, খাবার উপভোগ করার জন্য এবং কখন পেট ভরে গেছে তা বুঝতে গবেষকরা খাওয়ার সময় ইলেকট্রনিক্স বন্ধ করার এবং কাজ থেকে বিরতি নেওয়ার পরামর্শ দেন।
৩. অনেক বেশি সময় একা কাটানো
আমরা সবাই মাঝে মাঝে একাকীত্বের জন্য আকাঙ্ক্ষা করি, তবুও মিথস্ক্রিয়া মস্তিষ্কের কার্যকারিতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একাকী অতিরিক্ত সময় কাটানো মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর। সব সময় অন্যদের দ্বারা বেষ্টিত থাকলে সামাজিক ব্যস্ততা মস্তিষ্ককে উদ্দীপিত করে। তবে সমস্ত সময় একা কাটালে মস্তিষ্ক একই উদ্দীপনা পায় না। এর ফলে হতাশা, উদ্বেগ এবং এমনকি ডিমেনশিয়াও হতে পারে। প্রতিদিন বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর অভ্যাস মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
৪. অতিরিক্ত বসে থাকা
গবেষণায় দেখা গেছে যে, দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলে হৃদরোগ, স্থূলতা, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়। আপনি যত বেশি সময় বসে থাকবেন, তত বেশি অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি থাকবে। ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে ৪৫ বছরের বেশি বয়সী ৭,৯৮৫ জন প্রাপ্তবয়স্কের কার্যকলাপের ওপর করা এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা সবচেয়ে বেশি সময় বসে থাকেন তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি যারা কম সময় বসে থাকেন তাদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। জরিপে দেখা গেছে যে আমেরিকানরা বসে সময় কাটান তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বয়স্করা দিনে গড়ে ছয় ঘণ্টা বসে থাকেন।
৫. পর্যাপ্ত পানি পান না করা
যেহেতু শরীরের ৬০% পানি দিয়ে তৈরি, তাই এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে পানি পান করলে সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। পর্যাপ্ত তরল গ্রহণ বজায় রাখলে ত্বক নমনীয় থাকে, উষ্ণ আবহাওয়া শরীর ঠান্ডা হতে সাহায্য করে, পেশী এবং জয়েন্টের কার্যকারিতা উন্নত হয় এবং কিডনি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণে সহায়তা করে।
৬. রাতে দেরিতে খাওয়া
জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল এন্ডোক্রিনোলজি অ্যান্ড মেটাবলিজমে প্রকাশিত ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের একটি গবেষণা অনুসারে, রাতে দেরিতে খাওয়ার ফলে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিক হেলথ-এ প্রকাশিত ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের একটি গবেষণা অনুসারে, ঘুমানোর ঠিক আগে খাওয়ার অভ্যাস ঘুম নষ্ট করতে পারে। থেরাপিউটিক্স অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল রিস্ক ম্যানেজমেন্টে প্রকাশিত ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের একটি পর্যালোচনা অনুসারে, যদি আপনার গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ (GERD) থাকে তবে রাতে ঘুমানোর তিন ঘণ্টা আগে খেতে হবে, নয়তো তা অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
৭. অত্যধিক চিনি খাওয়া
ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, লিভারের রোগ, কিডনি রোগ এবং হৃদরোগ- এই সবই অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবারের সঙ্গে সম্পর্কিত। সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো মস্তিষ্কের কার্যকারিতা এবং মানসিক সুস্থতার মধ্যে একটি সংযোগ নির্দেশ করে। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতে, নারীদের প্রতিদিন ৬ চা চামচের বেশি এবং পুরুষদের ৯ চা চামচের বেশি চিনি খাওয়া উচিত নয়। গড়ে প্রাপ্তবয়স্করা প্রতিদিন প্রায় ১৭ চা চামচ চিনি গ্রহণ করেন, যা পুরুষদের জন্য দৈনিক পরিমাণের দ্বিগুণ এবং মহিলাদের জন্য দৈনিক পরিমাণের তিনগুণ বেশি।