
রমজানে ইফতারে কী খাওয়া হচ্ছে তার ওপর নির্ভর করে রোজাদারের সুস্থতা। এ জন্য দরকার পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার ইফতারে রাখা জরুরি। কিন্তু আমরা অনেকে জানি না, ইফতারে কোন খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। সারা দিন রোজা রেখে ভাজাপোড়া, ফাস্টফুড, অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার, সোডা বা কোমল পানীয় এসব খাবার খেয়ে থাকি।
যা পরবর্তী সময়ে শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এসব খাবার খেলে ক্লান্তি আরো বাড়তে পারে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক সেসব খাবার সম্পর্কে—
অতিরিক্ত তেল-মশলা বা ফ্রায়েড ফুড
ইফতারে অতিরিক্ত তেল ও মসলা দিয়ে তৈরি ফ্রায়েড ফুড (যেমন : ভাজি, সমুচা, বেগুনি) ক্লান্তি বাড়ানোর কারণ হতে পারে। এসব খাবারে প্রচুর ফ্যাট ও তেল থাকে, যা হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে এবং শরীরকে আরো ভারী এবং অস্বস্তি বোধ করতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত তেল ও মসলা ক্লান্তি এবং পেটের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
অতিরিক্ত চিনি ও মিষ্টি খাবার
ইফতারে অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার (যেমন : জিলাপি, রসগোল্লা, পায়েস) খাওয়ার ফলে শরীরে ইনসুলিন স্পাইক হতে পারে। এটি সাময়িকভাবে শক্তি বাড়ালেও পরে শরীরে গ্লুকোজের ঘাটতি সৃষ্টি করতে পারে, যা ক্লান্তির অনুভূতি বাড়িয়ে দেয়। তাই অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার খাওয়ার আগে সাবধান হওয়া উচিত।
ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়
চা, কফি বা অন্যান্য ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় গরমের কারণে রোজা শেষে শরীরে স্বস্তি আনলেও, ক্যাফেইন শরীর থেকে পানি বের করে দেয় (ডায়ুরেটিক প্রভাব)। এতে শরীরে পানির ঘাটতি সৃষ্টি হয় এবং ক্লান্তি অনুভূতি আরো বাড়ে। তাই ইফতারে এই ধরনের পানীয় কম পরিমাণে খাওয়া উচিত।
গাঢ় মাংস বা প্রক্রিয়াজাত মাংস
গাঢ় মাংস (যেমন : বিফ, মটন, খাসি) এবং প্রক্রিয়াজাত মাংস (যেমন : সসেজ, হটডগ) ইফতারে খাওয়া পরিহার করুন। এই ধরনের মাংসে থাকে উচ্চমাত্রার প্রোটিন ও ফ্যাট, যা হজম হতে সময় নেয় এবং শরীরে অতিরিক্ত ক্লান্তি সৃষ্টি করে।
অতিরিক্ত ঝাল বা মসলাদার খাবার
অতিরিক্ত ঝাল বা মসলাদার খাবার (যেমন : ঝাল ঝোল, অতিরিক্ত মসলাযুক্ত বিরিয়ানি) শরীরে তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং হজম প্রক্রিয়া ধীর করে দেয়। এর ফলে পেটের সমস্যা, অস্বস্তি এবং ক্লান্তি হতে পারে।
ইফতারে এমন খাবার বেছে নিন, যা শরীরের শক্তি পুনরুদ্ধার করে এবং ক্লান্তি দূর করতে সহায়ক হয়। অতিরিক্ত তেল, চিনি, ক্যাফেইন, সোডিয়াম বা প্রক্রিয়াজাত খাবার ইফতারে বাদ দিলে ক্লান্তি কমিয়ে আনা সম্ভব এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন নিশ্চিত করা যায়।