ঢাকা রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

nogod
nogod
bkash
bkash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
nogod
nogod
bkash
bkash

মোটরকেডের পাইলটকে মেরে ফেলে রেখে দিয়েছিলো: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়

আমাদের বার্তা প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬:০১, ২৬ জুলাই ২০২৪

সর্বশেষ

মোটরকেডের পাইলটকে মেরে ফেলে রেখে দিয়েছিলো: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতার সময় তার মোটরকেডের পাইলটকে হত্যা করা হয়েছে।

শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ভবন পরিদর্শনে গিয়ে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে দুর্বৃত্তদের নজিরবিহীন তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত বিটিভি ভবন ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী।

পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমার মোটরকেডের (গাড়িবহর) পাইলট (অগ্রবর্তী সদস্য) মোটর সাইকেল নিয়ে আসতো। সে ওই যাত্রাবাড়ির ওদিকেই থাকতো। ওখানে প্রত্যেক বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তারা খুঁজেছে- পুলিশের কেউ আছে কি না, আওয়ামী লীগের কেউ আছে কি না। ও যখন ওখান থেকে বের হযে আসছিলো, কাজে যাবে। তাকে সেখানে মেরে ফেলে রেখে দিয়েছিলো। যখন এখানে আসে না, খোঁজ করে দেখে লাশে পড়ে আসে। এইভাবে একদিকে হত্যাকাণ্ড একদিকে জ্বালাও-পোড়াও।

কোটা বিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, যেখানে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের পুরো কোটা বাতিল করে দিয়েছিলাম। মুক্তিযোদ্ধারা মামলা করে। হাইকোর্ট রায দেয়। আমরা আপিল করি। আমার করা প্রজ্ঞাপনই বাতিল হয়ে গেছে। কাজেই আমরা আপিল করেছিলাম প্রজ্ঞাপন পুনর্বহাল করতে। হাইকোর্ট তারা হাইকোর্টের রায় স্থগিত করে দেয়। পূর্ণাঙ্গ শুনানির সময় দিয়ে দেয়। তারিখও দিয়ে দেয়। যখন এটা স্থগিত করে দেয় তখনতো আমার করা সেই প্রজ্ঞাপনটাই কার্যকর হয়ে যায়। শেখ হাসিনা বলেন, যখন তারা আন্দোলন করেছে, বসেছে, আমি আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীকে বলেছি, আপনারা ধৈর্য ধরেন। কিছু বলবেন না। ওরা ছাত্র। আন্দোলন করছে। রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে আমরা কত আন্দোলন করেছি সেই স্কুল থেকে। ওরা কখনও করেনি। অন্তত এই ১৫ বছর ধরে আমি সরকারে আসার পর...।

তিনি বলেন, জুলাইয়ের ১৭ তারিখ যে তাণ্ডব শুরু হলো বাংলাদেশে। সবচেয়ে অবাক লাগে সেই ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ওই বিএনপি-জামায়াত মিলে শুরু করলো অগ্নিসন্ত্রাস। তখন তিন হাজার আটশোর মতো গাড়ি, ২৯টা রেল, আটটা লঞ্চ এবং প্রাইভেটকার, সিএনজি এগুলো পুড়িয়েছে। সেবারের পোড়ানোর থেকে এবারের পোড়ানোর চরিত্র আলাদা। এবারে তারা গান পাউডার ব্যবহার করেছে। নিমিষে সব পুড়ে একেবারে ছাই। সারা বাংলাদেশ থেকে এই সন্ত্রাসী এবং বিএনপি-জামায়াত বিশেষ করে শিবির, ঢাকায় এসে, ঢাকার আশেপাশে থেকে এভাবে আক্রমণ করেছে কোটা বিরোধী আন্দোলনের সূত্র ধরেই। তাদের ওপর নির্ভর করে এই ঘটনাগুলি ঘটানোর সুযোগ পেলো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেখানে পুলিশকে হত্যা করা হয়েছে। সাংবাদিকদের হত্যা করা হয়েছে। আমাদের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী, সাধারণ মানুষ। রংপুরে ভিসি-প্রক্টর মিটিং করছে সেখানে আগুন দিয়েছে। গাড়িতো পুড়িয়েছে বাড়ির ভিতরেও আগুন দিয়েছে। পুলিশ উদ্ধার করতে গেছে। তাদের ওপর হামলা করেছে। হ্যাঁ পুলিশের গুলিতে একজন মারা গেছে। যেই মারা যাক সেতো বাবা-মায়ের সন্তান। আমরা সেজন্য সত্যি দুঃখ প্রকাশ করি। তার বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জে। আমরা তার দাফন-কাফনের সবকিছুর ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীকে কীভাবে হত্যা করেছে! চট্টগ্রামে ছয় তলার ওপর থেকে ছুড়ে ছুড়ে নিচে ফেলেছে। জীবন বাঁচাতে জানলার শিক ধরে যারা জুলে আছে তাদের পাথর মেরেছে। হাত পায়ের রগ কেটেছে। গাজীপুরে আমাদের এক কর্মীকে শুধু মারেই নাই। হসপাতালে চিকিৎসা করতে গিয়েছিলো সেখান থেকে বের করে মেরে ঝুলিয়ে রেখে দিয়েছে। উত্তরায় পুলিশ সেই ইসলামিয়া হাসপাতালে চিকিৎসা করতে গেছে, সেখান থেকে বের করে রাস্তায় কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। পুলিশকে মেরে ঝুলিয়ে রেখেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৩, ২০১৪, ১০১৫ তে এই জ্বালাও-পোড়াও হত্যাকাণ্ড আমরা দেখেছি। আবার শুরু করলো ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে। যখন দেশটা এই দীর্ঘ ১৫টা বছর রাত-দিন পরিশ্রম করে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছি। এ প্রতিষ্ঠানগুলি কাদের জন্য? এদেশের মানুষের জন্য তো। এ প্রতিষ্ঠানগুলি মানুষকে সেবা দেয়। মানুষের জন্য কাজ করে। মানুষের রুটি-রুজির ব্যবস্থা করে। সেই প্রতিষ্ঠানগুলি একে একে পুড়িয়ে ফেলা। এরা কি স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক? এরা কি বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে? বা বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশ্বাস করে?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে যখন একটা মর্যাদাপূর্ণ জায়গায় নিযে আসলাম...এটাই কি তার প্রতিদান? যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান এরা পুড়ালো, যারা করিয়েছে তারা কি এসবের সুফল ভোগ করেনি? তারা কি এর থেকে কোনোরকম সুফল পায়নি?

আন্দোলকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে শুধু তারা না তাদের যারা অভিভাবক বা সেই ছাত্রদের শিক্ষক তাদেরকেও আমার প্রশ্ন, অভিভাবকদেরেকে আমার প্রশ্ন- যেখানে কোটার প্রজ্ঞাপন স্থগিত হয়ে গেছে তারপরেও আন্দোলন করার কী ছিলো? আমরা ধৈর্য ধরেছি। তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে। বারবার বলেছি, এই ছাত্রদের সাথে আমাদের মন্ত্রীরা দিনের পর দিন কথা বলেছে। একটার পর একটা তাদের আবদার। এটা করতে হবে, আমরা করে দিয়েছি। পরে আবার ঘুরে যেয়ে, না আরও চাই। তাদের যে দাবি ছিলো তা থেকে অনেক বেশি আমরা দিয়ে দিয়েছি। কিন্তু একটা জিনিস আমি লক্ষ্য করলাম। এই মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার পরিবার, মুক্তিযুদ্ধের দিকেই যেন তাদের মনে বেশি  একটা ক্ষোভ।
 

জনপ্রিয়