জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে খুব বেশি সময় নেয়ার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে একটি প্রস্তাব তৈরি করতে হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। আর আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটি নিয়ে এখনই মন্তব্য করাটা অগ্রিম হয়ে যাবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যার রাজনৈতিক পথ পরিক্রমাটা দীর্ঘ। তবে যতটা রাজনীতিবিদ হয়ে উঠেছেন, তার থেকে বরং নিপাট ভদ্রলোকই হয়ে উঠেছেন বেশি। সমকালীন রাজনীতিবিদদের থেকে যার পরিচয় অনেকটাই আলাদা।
গত ৫ আগস্টের পর বদলে যাওয়া বাংলাদেশ নিয়ে মুখোমুখি হয়েছেন বিএনপি মহাসচিব। অর্ন্তবর্তী সরকার ও সংস্কারের নানা উদ্যোগ নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন। জানিয়েছেন নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ঠিক কতদিন সময় দিতে চান তারা।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আমার কাছে মনে হয় না খুব বেশি সময়ের প্রয়োজন। এখানে যেটি প্রয়োজন, তাৎক্ষণিক আমি যা মনে করি, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলে তাদের মতামত নিয়ে, আমাদের প্রস্তাবগুলো নিয়ে একসঙ্গে বসে একটি প্রস্তাব তৈরি করবেন তারা। নির্বাচনের জন্য একটি উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করবেন। যেটাকে আমরা বলছি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড। এর জন্য প্রয়োজন নির্বাচন কমিশনকে সঠিক করা।
দীর্ঘদিনের জোট সঙ্গী জামায়াতে ইসলামী সঙ্গে কি দূরত্ব বাড়ছে বিএনপির? এমন প্রশ্নেও সোজাসাপটা জবাব বিএনপি মহাসচিবের। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী আর বিএনপি কখনো একটি দল ছিল না। দেশে ফ্যাসিবাদের যে আক্রমণ, আগ্রাসন ও অত্যাচার ছিল, তা মোকাবিলা করার জন্য আমরা অনেকগুলো রাজনৈতিক দল একত্র হয়েছিলাম। প্রথমে চার দল ছিল, তারপর এলো ২০ দল। সেখানে জামায়াতে ইসলামী একটি অংশ ছিল। সেই হিসেবে আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বিএনপির যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তা সঠিক নয়; আবার একীভূত হওয়ার কথাও সঠিক নয়।
মানুষকে উপেক্ষা করায় শেখ হাসিনা সরকারের পতন অনিবার্য ছিল বলেও মনে করেন মির্জা ফখরুল। দলটির আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রশ্নে দেখালেন রাজনৈতি প্রজ্ঞা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটা অনেক হাইপোথেটিক্যাল প্রশ্ন। এটার উত্তর দেয়া সমুচিত মনে করি না আমি। তবে আমি যেটা মনে করি, আওয়ামী লীগের যে অতীত ঐতিহ্য, তারা নির্বাচনে থাকে না এমনটা নেই।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে বিএনপি আইনি লড়াই করবে বলেও জানান মির্জা ফখরুল। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা আমাদের আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেছি। তারা এ ব্যাপারে কাজ করছে।
এদিকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান কবে দেশে ফিরবেন সেটি তার ওপর নির্ভর করছে বলেও জানান বিএনপির এই নেতা। মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, তিনি যদি চান আইনিভাবে বেরিয়ে আসবেন, তাহলে একটু সময় লাগবে। আর যদি প্রত্যহারের বিষয় উঠে, তাহলে সেটি সরকার করবে।