রাজধানীর হাতিরঝিলে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দীপ্ত টিভির সম্প্রচার কর্মকর্তা তানজিল জাহান ইসলাম ওরফে তামিম (৩৪) হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার মো. রাসেল নামের এক ব্যক্তির ৪ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ শনিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাতিরঝিল থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ গোলাম আজম আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের আদালত এই রিমান্ডের আদেশ দেন।
এ সময় আসামি পক্ষের আইনজীবী মো. মাহবুব আলম সরকার, ফরহাদ হোসাইন রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন৷ রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার ৪ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
শুনানিতে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা জানান, ঘটনাস্থলে আসামির বাসা। সিসিটিভি ফুটেজে এই আসামিকে দেখা গেছে। আসামি একজন রিকশাচালক। সে ওখানে দেখতে গিয়ে এই মামলায় জড়িত হয়েছে। আদৌও এই হত্যাকাণ্ডের সাথে এ আসামি জড়িত না। আসামির রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের প্রার্থনা জানান এই আইনজীবীরা।
আদালত কক্ষে আসামি রাসেল বিচারককে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ঘটনাস্থলে কি ঘটেছে তা আমি দেখতে গিয়েছিলাম। আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না। ঘটনাস্থলের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় আমাকে পুলিশ ধরে নিয়ে এসেছে। আমি পালিয়ে যায়নি। আমার বাসা ওখানে। আমি নির্দোষ।’
শনিবার ভোরে রাসেলকে রাজধানীর রামপুরা থানাধীন মালিবাগ বড় বাজার এলাকা থেকে রাসেলকে গ্রেফতার করেন পুলিশ। এ নিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হলো।
গত ১১ অক্টোবর দীপ্ত টিভির সম্প্রচার কর্মকর্তা তানজিল হত্যা মামলায় গ্রেফতার পাঁচ জনের চার দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
রিমান্ড যাওয়া ওই পাঁচ ব্যক্তিরা হলেন, আব্দুল লতিফ (৪৬), কুরবান আলী (২৪), মাহিন (১৮), মোজাম্মেল হক কবির (৫২) ও বাঁধন (২০)।
জানা যায়, তিনজন মালিকের জমি নিয়ে প্লেজেন প্রোপার্টিস একটি ভবন নির্মাণ করেন। ৯ তলা ওই ভবনে ২৭টি ফ্ল্যাট ছিল। প্রত্যেক জমির মালিককে পাঁচটি করে ফ্ল্যাট দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তাকে দুটি ফ্ল্যাট দেওয়া হয়। বাকি তিনটির মধ্যে একটি ফ্ল্যাট মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তার শ্বশুরের কাছে বিক্রি করেন ডেভেলপার কোম্পানির মালিক।
গত ১০ অক্টোবর বাকি দুটি ফ্ল্যাটের অভ্যন্তরীণ কাজ শুরু করার সময় ২০-২৫ জন দুর্বৃত্ত ভবনের সিসি ক্যামেরা ভেঙে হামলা চালায়। তানজিল নিচ থেকে ফ্ল্যাটের দিকে এগিয়ে গেলে দুর্বৃত্তরা তার ওপর হামলা চালায়। গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনায় নিহতের বাবা সুলতান আহমেদ বাদী হয়ে হাতিরঝিল থানায় ১৬ জনকে আসামি করে হত্যা মামলাটি দায়ের করেন।