ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের ঢাকা ফ্লাইট চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশ ও আফ্রিকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
সোমবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ভার্চুয়ালি বক্তব্য প্রদানকালে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ইথিওপিয়ার মধ্যে সরাসরি বিমান সংযোগ শুধুমাত্র পর্যটন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্যই সহায়ক হবেনা , অধিকন্তু এটি বৃহত্তর আফ্রিকা মহাদেশের প্রবেশদ্বার হিসাবে কাজ করবে।’
রোববার ঢাকায় অবতরণের মধ্য দিয়ে আফ্রিকার বৃহত্তম আকাশযান ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের উদ্বোধনী ফ্লাইটটি আদ্দিস আবাবা-ঢাকা-আদ্দিস আবাবা রুটের কার্যক্রম শুরু হয়।
উপদেষ্টা তৌহিদ তার বক্তব্যে দু’দেশের মধ্যে আর্থ-সামাজিক সম্পর্ক জোরদার করতে ও আফ্রিকায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য নির্বিঘ্নে ভ্রমণের বিকল্প হিসেবে এ রুটের কৌশলগত গুরুত্ব তুলে ধরেন।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ ও ইথিওপিয়ার মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গভীরতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি করবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব নাসরীন জাহান ও বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (সিএএবি) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবির ভূঁইয়া।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সফররত ইথিওপিয়ান সিভিল এভিয়েশন অথরিটির মহাপরিচালক গেটাচেউ মেনগিস্টি আলেমায়েহু ও ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্স গ্রুপের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার (সিসিও) লেমা ইয়াদেচা।
বাংলাদেশে এয়ারলাইন্সের জেনারেল সেলস এজেন্ট রিদম গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অভির হোসেন স্বাগত বক্তব্য পাঠ করেন।
বাংলাদেশে ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের প্রবেশ এভিয়েশন সেক্টরে বাংলাদেশের সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব।
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ বৈশ্বিক বিমান চলাচল শিল্পে একটি শক্তিশালী প্রতিযোগী হিসাবে আবির্ভূত হচ্ছে এবং আমরা এ স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে কাজ করে যাচ্ছি।’
সিএএবি চেয়ারম্যান নতুন পরিষেবার প্রভাব তুলে ধরে একে আফ্রিকা জুড়ে ও তার বাইরেও গন্তব্যের প্রবেশদ্বার হিসেবে বর্ণনা করেন, যা বাংলাদেশের বিমান ও ভ্রমণ শিল্পের জন্য একটি নতুন অধ্যায়।
ইথিওপিয়ার সিভিল এভিয়েশন অথরিটির মহাপরিচালক উভয় দেশের বিমান চলাচল খাতে প্রবৃদ্ধি বাড়াতে বাংলাদেশের সাথে ধারনা বিনিময় ও প্রযুক্তি হস্তান্তরে সহযোগিতায় তার দেশের প্রস্তুতি ব্যক্ত করেন।
রিদম গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অভির হোসেন জানান, ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্স প্রাথমিকভাবে পাঁচটি সাপ্তাহিক ফ্লাইট পরিচালনা করবে, যা বাংলাদেশী যাত্রীদের ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার প্রধান শহরগুলোসহ ১৪০টির বেশি গন্তব্যে পৌঁছে দেবে।
১৪৭টি বিমানের বহরের সাথে ইথিওপিয়ান এয়ারলাইনস যাত্রীর পরিমাণ, গন্তব্য, বহরের আকার ও আয়ের দিক থেকে আফ্রিকার বৃহত্তম আকাশযান এবং সেবা পরিবেশিত দেশগুলোর প্রেক্ষিতে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম হিসাবে স্থান করে নিয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিমান ও ভ্রমণ খাতের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতগণ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ইথিওপিয়ার শিল্পীদের একটি দল ঐতিহ্যবাহী আফ্রিকান নৃত্য ও গান পরিবেশন করে ।