‘উই আর নাহিদ’ (আমরাই নাহিদ) হ্যাশট্যাগে ছেয়ে গেছে ফেসবুক। লাল ব্যাকগ্রাউন্ডের উপর #WeAreNahid লিখে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা এবং ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা নাহিদ ইসলামের পাশে দাড়ানোর বার্তা দিচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীসহ অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রিফাত রশিদ, মো. আবু বাকের মজুমদার, আবদুল কাদের, হাসনাত আব্দুল্লাহ ও আব্দুল হান্নান মাসউদ, নাট্য নির্মাতা, জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিকেয়টসহ আনেকে এটি ব্যবহার করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন।
জানা গেছে, নাহিদ ইসলামকে নিয়ে কে বা কারা অপপ্রচার চালাচ্ছেন। সেই অপপ্রচার রুখে দিতে তার পাশে দাঁড়াতেই সবাই হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করছেন।
#WeAreNahid_Asif হ্যাশট্যাগ লিখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ লিখেছেন, ‘আজকে দেখছি নীতিহীন একটা মানুষ টকশোতে গিয়ে গলাবাজি করে গেলেন। উনি বা ওনাদের বিষয়ে আমি মাসুদ কথা বলা শুরু করলে ল্যাংটা হয়ে যাবেন। বিপ্লব কেমনে হয়েছে আমি আব্দুল হান্নান মাসউদ, আব্দুল কাদের, রিফাত রশিদ আর মাহিন সরকারের চেয়ে ভালো কেউ ব্যাখ্যা করতে পারবে না।’
তিনি আরো লিখেন, ‘নাহিদ ভাই, আসিফ ভাইকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করবেন? এই নাহিদ ভাই, আসিফ ভাইয়ের ১৬, ১৭ জুলাই থেকে শুরু করে ২৫ তারিখ আটক হওয়ার আগ পর্যন্ত ঐতিহাসিক ভূমিকাই পরবর্তীতে বিপ্লবে আমাদের পথনির্দেশনা দিয়েছে। আটকাবস্থা থেকে বেরিয়ে যে নেতৃত্ব ওনারা দিয়েছেন, তার ফলাফলস্বরূপ আজকে আপনাদের এসব গলাবাজি। আমরা কথা বলা শুরু করলে তখন মুখ চেপে ধরতে আইসেন না৷ পরিষদের ইতিহাসও জানানো হবে।’
আন্দোলনের সময় নির্যাতনের স্বীকার হওয়া নাহিদের ছবি পোস্ট করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ লিখেছেন, ‘গত ১৬ বছরে বাংলাদেশের অবস্থা এমনই ছিল। যারা হাসিনার পুনর্বাসন প্রকল্পকে সমর্থন করে তারা দেশকে সেই একই পরিস্থিতিতে ফিরিয়ে আনবে, যেমন- রক্তপাত, জোরপূর্বক গুম, হত্যা এবং আরও অনেক কিছু। হাসিনা শাসনের পুনর্বাসনকে সমর্থন করলে শেষ পর্যন্ত একই বিধ্বংসী পরিণতি ঘটবে। ফ্যাসিস্ট বিরোধী বাংলাদেশ নাহিদ। আমরা নাহিদ। জুলাই ১৩৬, ২০২৪।’
সম্প্রতি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির (এনআইবি) মহাপরিচালক পদের নিয়োগপত্রে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সুপারিশসহ সই করা ছবি ভাইরাল হয়েছে। এ বিষয়ে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বিষয়টি অসত্য এবং আমাকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি লিখেছেন, ১৫ অক্টোবরের নিয়োগ ২২ অক্টোবরই বাতিল করা হয়েছিল। সুপারিশকৃত গোপন নথির ছবি যারা পেয়ে যায় তাদের কাছে বাতিলকৃত প্রকাশ্য নোটিশটি অজানা থাকার কথা না। তারপরও যেকোনো মূল্যে অসত্য প্রচার করে বিতর্কিত করাটা এই সময়ের রাজনীতি।
তিনি আরো লিখেছেন, মূলত আওয়ামী বিরোধী ও আন্দোলনের পক্ষের একটি গ্রুপ এই ব্যক্তির সুপারিশ করেছিল। পরবর্তীতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা উনার একাডেমিক এক্সেলেন্সি দেখে এনআইবি পদে নিয়োগ দেন। কিন্তু ঐ ব্যক্তির রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড জানার পরে সঙ্গে সঙ্গেই উনার নিয়োগ বাতিল করা হয়। গত মাসের ঘটনা। বাতিল করার ঘোষণাটিও সকলে অবগত আছেন।
এদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) চলমান হল আন্দোলনকে কেন্দ্র করে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে নাহিদ ইসলামকে নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। ভিডিওতে দেখা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘সব শালারা বাটপার, আর্মি হবে ঠিকাদার’ বলে স্লোগান দিচ্ছেন। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে সচিবালয়ের সামনে ছিলেন উপদেষ্টা নাহিদ।
শিক্ষার্থীরা জানান, এই স্লোগান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকেই দিয়ে আসছিলেন। মূলত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে এই স্লোগান দেয়া হয়েছে। নাহিদ ইসলামকে উদ্দেশ্য করে নয়।
তারা জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চান তাদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়ন হোক। এ জন্যই ‘আর্মি হবে ঠিকাদার’ বলা হয়েছে।