ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ , ৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

তোমরা মা*র খেয়েছ আরো খাবে, পুলিশকে ধম*ক দিয়ে জিয়াউল

জাতীয়

আমাদের বার্তা প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬:১৭, ২০ নভেম্বর ২০২৪

আপডেট: ১৬:৪৮, ২০ নভেম্বর ২০২৪

সর্বশেষ

তোমরা মা*র খেয়েছ আরো খাবে, পুলিশকে ধম*ক দিয়ে জিয়াউল

ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন। বিচারপতিরা এজলাস ছাড়ার পর দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা আসামিদের কাঠগড়া থেকে হাজতখানায় নেয়ার জন্য যান।

এ সময় জিয়াউল আহসান তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘কেউ আমাকে ধরবে না, কাছে আসবে না। তোমরা মার খেয়েছ, ভবিষ্যতে আরো খাবে। আমাকে জেলাখানায় কাগজ-কলম দেয়া হয় না। আমি লিখবো। আমাকে কাগজ-কলম দিতে হবে। আমার বিরুদ্ধে যা বলেছে, তা আমাকে দাও। আমি দেখব।’

এ সময় জিয়াউল আহসানকে বেশ উত্তেজিত দেখা যায়। তবে তার আইনজীবী নাজনীন নাহার বলেন, পরে সবই দেওয়া হবে।

এরপর আদালত থেকে কারাগারে নিতে প্রিজনভ্যানে নেয়ার জন্য কয়েকজন পুলিশ সদস্য জিয়াউল আহসানের দুই হাত ধরে রাখেন। এ সময়ও তিনি তাদেরকে হাত ছেড়ে দিতে বলেন।

এর আগে আদালতে শুনানি চলাকালে শেষের দিকে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন জিয়াউল আহসান। ওই সময় তাকে বসাতে গেলে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যকে ধমক দিয়ে সরিয়ে দেন তিনি। একপর্যায়ে জিয়াউল আহসানের আইনজীবী নাজনীন নাহার বিচারপতিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, জিয়াউল আহসান কথা বলতে চান। এ সময় কাঠগড়া থেকে জিয়াউল আহসান বলেন, ‘আমি আয়নাঘরে কখনো চাকরি করিনি। আমি টেকনিক্যাল দায়িত্বে ছিলাম।’

এ সময় আদালত বলেন, ‘তদন্ত চলছে। আপনার আইনজীবী আছে। আইনজীবী বলার পর প্রয়োজনে আপনি যোগ করবেন।’ এরপরও তিনি বলতে থাকেন। তখন আদালত বলেন, ‘মি. জিয়াউল আহসান আপনি একজন রেসপন্সিবল পার্সন। আপনি আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে জানাবেন। কোন মিসিং থাকলে সেটা বলার জন্য আমরা সুযোগ দেবো।’

এর আগে জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে আদালতে প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান ছিল বাংলাদেশের বসনিয়া-হার্জেগোভেনিয়ার ‘কসাই’ রাদোভান কারাদজিচের মতো। তিনি র‍্যাবের বিভিন্ন পদে ছিলেন, সর্বশেষ এনটিএমসির মহাপরিচালক ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের গুম, গুমের পরে নিয়ে গিয়ে পৈশাচিক নির্যাতন, হত্যার পরে লাশ ডিসপোজাল করা, এসব কালচারের জনক। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় যারা বিরোধী দলে থেকে বিভিন্ন সময় কথা বলার চেষ্টা করেছে, তাদের তিনি একের পর এক পরিকল্পিতভাবে অপহরণ করেছেন, গুম করেছেন, বছরের পর বছর আটকে রেখেছেন। তাদের মধ্যে বহু মানুষ আজও ফিরে আসেনি।’

তাজুল ইসলাম আরো বলেন, ‘জিয়াউল আহসানের নেতৃত্বে বিএনপিনেতা ইলিয়াসকে গুম করে হত্যা করা হয় বলে আমরা জানতে পেরেছি। এ ছাড়াও নাম জানা-না জানা অনেক মানুষকে অপহরণের পর নির্যাতন করা হয়েছে। তার পৈশাচিকতা ৯০-এর দশকে বসনিয়া-হার্জেগোভেনিয়ার সারফিয়ান বাহিনী যে গণহত্যা চালিয়েছিল, যে ধরনের অত্যাচার করত, তার সঙ্গে আমরা তুলনা করেছি। বলকানের কসাইয়ের মতো বাংলাদেশের কসাই হিসেবে এই জিয়াউল আহসান হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে, গুম নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি গুম-খুন ইন্টারনেট ব্যবহার বন্ধ করে অন্ধকারে হত্যারও হত্যার আলামত নষ্ট করেছেন।’


জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক পুলিশ প্রধান ও ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালকসহ আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে তাদের ট্রাইব্যুনালের মামলায় কারাগারে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এই মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৯ ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হয়।

জনপ্রিয়