হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরকে হয়রানির ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)। আজ রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে বাহিনীটি।
এসবি জানিয়েছে, এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে এ ঘটনায় অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
পুলিশের এই বিশেষ শাখা জানায়, বিগত শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলের ‘ব্লকড লিস্ট’ এর কারণে এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাটি ঘটেছে। এ তালিকায় কয়েক হাজার লোককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল, যাতে করে বিদেশ সফরের সময় তাদের আটকে দেওয়া যায় বা বিদেশ ভ্রমণ থেকে বিরত রাখা যায়।
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর পুলিশের বিশেষ শাখা আগের তালিকা থেকে রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, ভিন্নমতাবলম্বী, সাংবাদিক ও অধিকারকর্মীদের বাদ দিতে শুরু করে। কাজটির বেশিরভাগই হাতে-কলমে করা হচ্ছে। ফলে কিছু ভিন্নমতাবলম্বী ও সাংবাদিকের নাম এখনো রয়ে গেছে। তালিকাটি দ্রুত যাচাই করে সংশোধন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
নূরুল কবীরকে হয়রানির ঘটনায় আবারও দুঃখ প্রকাশ করে এসবি জানায়, বাংলাদেশ পুলিশ জনগণের বন্ধু। দেশ ও জনগণের সেবায় পুলিশ বাহিনী দৃষ্টান্ত গড়তে চায়।
এরআগে, বিমানবন্দরে হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবীরকে। এবিষয়টি স্বীকার করে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। পরে জানানো হয়, ‘প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’
জানা যায়, একটি মিডিয়া কনফারেন্সে যোগ দিতে কলম্বো যাওয়ার সময় বিমানবন্দরে হয়রানির শিকার হয়েছেন নূরুল কবির। আবার দেশে ফেরার সময়ও তিনি একইভাবে হয়রানির শিকার হন। এশিয়া মিডিয়া ফোরাম-২০২৪-এ যোগ দিতে গত ১৮ নভেম্বর কলম্বো যান এবং গতকাল ঢাকায় আসেন তিনি।
শনিবার নূরুল কবীরকে তাঁর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে যখনই আমি বিদেশে যাই তখনই ঢাকা বিমানবন্দরে দেশটির ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ আমাকে হয়রানি করে আসছে। হয়রানির মধ্যে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের আমার পাসপোর্ট নেওয়া, ভ্রমণের উদ্দেশ্য লেখা থাকলেও সে সম্পর্কে আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা, প্রায় এক ঘন্টা অপেক্ষা করানো, গোপনীয়তা লঙ্ঘন করে আমার পাসপোর্ট পৃষ্ঠার ছবি তোলা ইত্যাদি। ফ্লাইট ছাড়ার কয়েক মিনিট আগে আমার কাগজপত্র ফেরত দেওয়া। তবে, ফেরার সময় কোনো ঝামেলা হয়নি। এবার, ১৮ নভেম্বর যখন আমি একটি মিডিয়া কনফারেন্সের জন্য বিদেশে যাচ্ছিলাম, আমি আশা করেছিলাম যে ঢাকা বিমানবন্দরে আমার হয়রানির দিন শেষ হয়েছে, অন্তত কিছু সময়ের জন্য হলেও। আমি ভুল ছিলাম. এবার বরং দ্বিগুণ হয়রানি করা হয়েছে। দেশ ছাড়ার সময় এক ঘণ্টা এবং ২২ নভেম্বর দেশে ফেরার সময় এক ঘণ্টা করে বসিয়ে রাখা হয়। দেশপ্রেমিক হওয়াটা দেশের গোয়েন্দা সংস্থার সন্দেহের বিষয়। দেশের সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থা এবং সরকারে যারা তাদের তত্ত্বাবধান করে, তাদের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তুলতে বাধ্য হচ্ছি।’