পুলিশ বিভাগের শৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর বার্তা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। পূর্বানুমতি ছাড়া পুলিশ সদস্যরা মহাপুলিশ পরিদর্শকের (আইজিপি) সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য তার বাসভবনে যেতে পারবেন না। এ ছাড়া ইউনিটপ্রধানের অনুমতি ছাড়া সংশ্লিষ্ট ইউনিটের কোনো পুলিশ সদস্য কর্মস্থল ত্যাগ বা ইউনিটের অধিক্ষেত্রের বাইরে যেতে পারবেন না। আইজিপি হিসেবে বাহারুল আলম দায়িত্ব গ্রহণের পর এই পৃথক নির্দেশনা এসেছে।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে। গত শনিবার এ নির্দেশনা পুলিশের সব ইউনিটপ্রধানের কাছে পাঠানো হয়েছে।
নতুন নির্দেশনার বিষয়ে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা আমাদের সময়কে বলেন, বিগত ১৫ বছর দলবাজির কারণে পুলিশে শৃঙ্খলায় বড় ঘাটতি ছিল। অনুমতি ছাড়াই পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরা আইজিপির বাসভবনে আসা-যাওয়া করতেন। পদোন্নতি, পদায়নসহ নানা তদবির নিয়ে আইজিপির বাসভবনে যেতেন তারা। আইজিপিরাও তাদের সাক্ষাৎ দিতেন। অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশের শৃঙ্খলায় এর প্রভাব পড়ত। এ ছাড়া এতে সিন্ডিকেটও তৈরি হতো। এই ধারা ভাঙতে চান নতুন আইজিপি। যে কারণে শৃঙ্খলা রক্ষায় এই কঠোর বার্তা এসেছে।
শনিবার পুলিশ সদরের অতিরিক্ত ডিআইজি (হেডকোয়ার্টার্স) স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়েছে- ‘ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ মহোদয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য বাসভবনে যেতে হলে পূর্বানুমতি প্রয়োজন। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার জন্য বাংলাদেশ পুলিশের সব সদস্যকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’ ইতোমধ্যে এই নির্দেশনা পুলিশের সব ইউনিট প্রধানের কাছে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একশ্রেণির দলবাজ পুলিশ সদস্য, ইউনিটপ্রধানকে না জানিয়েই নিজ ইউনিট বা দায়িত্বপূর্ণ এলাকার বাইরে চলে যেতেন। এতে প্রশাসনিক কাজে যেমন জটিলতা তৈরি হতো, তেমনি বিভাগীয় শৃঙ্খলায়ও ফাঁক তৈরি হতো। ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলার ওসি ইউনিটপ্রধানকে না জানিয়ে তদবির করতে উপঢৌকন নিয়ে পুলিশ সদর দপ্তর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী এমপিদের কাছে ধর্না দিতেন। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হতো না। উল্টো তাদের পাশেই থাকত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। এখন থেকে এ ধরনের ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে।