দেশের বাইরে প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে ৪০ জনেরও বেশি চিকিৎসক ফেরেননি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। দরিদ্র দেশের জন্য এটা অপচয় জানিয়ে তিনি বলেন, এসব ক্ষেত্রে শর্তসাপেক্ষে বিদেশে প্রশিক্ষণে যেতে পারবেন চিকিৎসকরা।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে বিশ্ব মুভমেন্ট ডিসঅর্ডার দিবস পালন অনুষ্ঠানে নূরজাহান বেগম এসব কথা জানান।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, আমাদের দেশের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী বিশ্বমানের। জুলাই গণ-অভ্যুথানে আহতদের চিকিৎসার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মেডিক্যাল টিম এসেছে। তারা সবাই বলেছে আহতদের যে সেবা দেয়া হয়েছে তা বিশ্বমানের। তারা সবাই স্বীকার করেছেন বিশ্বের অন্যান্য দেশ হলেও আহতদের একই চিকিৎসা দেওয়া হতো।
তিনি চিকিৎসকদের গবেষণার প্রতি মনোনিবেশ করতে বলেন। তিনি জানান, গবেষণার জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে আরও টাকা দেয়া হবে। তবুও গবেষণা যেন অব্যাহত থাকে।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, আমাদের দেশের চিকিৎসকরা দেশের বাইরে প্রশিক্ষণ নিতে গেলে তাদের উৎসাহিত করা হবে। কারণ চিকিৎসকরা দেশের বাইরে গেলে তারা নতুন নতুন চিকিৎসা ও অপারেশন শিখে এসে দেশবাসীকে সেবা দিতে পারবেন। এজন্য মন্ত্রণালয় তাদের ছুটি সহজলভ্য করবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা চিকিৎসকদের পদোন্নতির জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এতদিন যেসব চিকিৎসক বৈষম্যের শিকার হয়েছেন তাদের জন্য কাজ করব।
তিনি চিকিৎসকদের আরও মানবিক হওয়ার আবেদন করেন। রোগীদের গায়ে হাত দিয়ে হাসিমুখে কথা বলে তাদের মন জয়ের চেষ্টা করতে বলেন।
মুভমেন্ট ডিসঅর্ডার হলো নিউরোলজিকাল রোগ। মস্তিষ্কের বেজাল গ্যাংলিয়া নামক অংশের সমস্যার জন্য দেখা দেয় মুভমেন্ট ডিসঅর্ডার। মুভেমেন্ট ডিসঅর্ডার হলো কিছু রোগের সমন্বয়। যেমন পারকিনসন্স ডিজিজ, ডিস্টোনিয়া, ডিসকাইনেসিয়া, কোরিয়া, টিক ইত্যাদি। শরীরের বিভিন্ন অংশ অস্বাভাবিক নড়াচড়া দেখা দেয়। অনেক সময় চলাফেরা কষ্টকর হয়ে যায়। এ কারণে জীবনযাপন অস্বাভাবিক হয়ে যায়।
আমেরিকার একটি গবেষণায় দেখা গেছে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানু্ষ মুভমেন্ট ডিসঅর্ডারে ভোগে। দেশে এখন পর্যন্ত কোনো গবেষণা না থাকায় আসল পরিসংখ্যান জানা যায় নাই। মুভমেন্ট ডিস অর্ডার নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য বিশ্বব্যাপী পালিত হয় বিশ্ব মুভমেন্ট ডিস অর্ডার দিবস।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. আবু জাফর। আরও উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক কাজী দীন মোহাম্মদ, যুগ্ম-পরিচালক অধ্যাপক বদরুল আলম, এসএনবির সভাপতি অধ্যাপক এম এ হান্নান, এসএনবির মেম্বার সেক্রেটারি ডা. নাজমুল হুদা, এসএনবি জয়েন্ট-কনভেনর ডা. মো. আব্দুল আলীম, ডা. মাহমুদুল হাসান ও ডা. আবুল ফজল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডা. হুমায়ুন কবীর হিমু।