প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তিনটি বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে মতামত চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে বৈঠকের বিরতির সময় ফরেন সার্ভিস একাডেমি থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তিনটি বিষয়ে আলোচনা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রথম বিষয় ভারতসহ সারাবিশ্বে যে প্রোপাগান্ডা চলছে সেগুলো নিয়ে রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের করণীয়; দ্বিতীয় বিষয় আগরতলায় সহকারী হাইকমিশন অফিস ভাঙচুর ও পতাকা অবমাননা নিয়ে করণীয় এবং তৃতীয় বিষয় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে যে গল্প ও উপন্যাস সারা দুনিয়ায় চলছে তা নিয়ে মতামত জানতে চেয়েছেন তিনি।
এ সময় বৈঠকের এজেন্ডা সরকারের পক্ষে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান তুলে ধরেন বলেও জানান তিনি।
আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, আজকের বৈঠকে নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা ছিল না। সবগুলো দল তাদের মতামত তুলে ধরছেন রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের করণীয় কি। এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে যে আলোচনা হয়েছে তা হলো-
১. বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল আজকের আলোচ্য সূচনায় নির্বাচন না থাকলেও প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন দেয়ার জন্য তাগাদা দিয়েছেন।
২. স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সেবার ঘাটতি সারাদেশে পরিলক্ষিত হচ্ছে, এই ক্ষেত্রে সরকার কী ব্যবস্থা নিবে।
৩. সবাই রাষ্ট্রকে আশ্বস্ত করেছেন স্বাধীনতা ও সাবভৌমত্বের প্রশ্নে এবং জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে আমরা আপনাদের পিছনে আছি। আপনাদের সিদ্ধান্ত ও লড়াইয়ের পিছনে আমরা অংশীদার।
তিনি বলেন, দুই-একজন পরামর্শ দিয়েছেন সংখ্যালঘুদের ব্যাপারে আমরা একটি জাতীয় কমিশন করতে পারি কি না। জাতীয় কমিশন করলে ৫০ বছরের বঞ্চনা বিশেষ করে গত ১৬ বছরে যে বঞ্চনা হয়েছে তার সত্যতা কতটুকু তা বের হয়ে আসবে, এমন মতামতও কেউ কেউ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
এর আগে বিকেল সোয়া ৪টার পর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপে বসেন বিএনপিসহ আট দলের প্রতিনিধিরা। বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডক্টর খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডক্টর আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও অধ্যাপক ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন উপস্থিত রয়েছেন।
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া মো. গোলাম পারোয়ার, নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বৈঠকে অংশ নিয়েছেন। এ ছাড়া গণঅধিকার পরিষদ, গণতন্ত্র মঞ্চ, গণসংহতি আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য, এনপিপি, এলডিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বৈঠকে অংশ নিয়েছে।
এর আগ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় যমুনায় বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। বৃহস্পতিবার তিনি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ড. ইউনূস।