বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেছেন, অতীতে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি এবং এ খাতের সংকটের জন্য দায়ী খোদ ব্যবসায়ীরাই। তাই, এখন থেকে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা ছাড়া জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের কোনো প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হবে না।
আজ শনিবার (৭ ডিসেম্বর) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের কার্যালয়ে জ্বালানির দাম ও সরবরাহ নিয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি।
ডিসিসিআই আয়োজিত সেমিনারে উঠে আসে, তেল, কয়লা ও এলএনজি আমদানিতে অতিরিক্ত টাকা খরচ হওয়ায় দেশে বিদ্যুতের দাম বাড়ছে।
গেল বছর গ্রাহক পর্যায়ে তিন দফায় ১৫ শতাংশ বাড়ানো হয় বিদ্যুতের দাম। আর চলতি বছর বেড়েছে একবার। বর্তমানে খুচরায় ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের দাম ৮ টাকা ৯৫ পয়সা।
সেমিনারে ব্যবসায়ীদের কাছে প্রশ্ন রেখে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, এতো টাকার গ্যাস আমদানির জন্য দেশীয় ব্যবসায়ীরা কি এর জন্য অনুশোচনা করবেন, না ক্ষতিপূরণ দেবেন?
এ সময় ভোলার গ্যাস একটি কোম্পানিকে দেওয়ার কারণ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
জ্বালানি উপদেষ্টা আরও বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে এতদিন কোনো প্রতিযোগিতা ছিল না। পরিচয় থাকলেই গ্যাস উৎপাদন বা পাওয়ার প্ল্যান্ট করা যেত। কিন্তু এখন থেকে বিনা টেন্ডারে এই খাতে কোনো ব্যবসা হবে না। এবার তেল আমদানি উন্মুক্ত করার ফলে টেন্ডারে ১২ জন অংশ নিয়েছেন। এতে সরকারের ৩৭০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। পাশাপাশি এলএনজি আমদানি উন্মুক্ত করার ফলে বিদেশি বড় কোম্পানিও টেন্ডারে অংশ নিচ্ছে।
সেমিনারে অন্য বক্তারা জানান, শুধু টাকার অবমূল্যায়নের কারণে গেল তিন বছরে গ্যাস থেকে উৎপাদিত প্রতি কিলো ওয়াটে বিদ্যুতের দাম ১০ টাকা বেড়েছে। কয়লার ক্ষেত্রে বেড়েছে ২ টাকা ৬৭ পয়সা। আর আমদানিতে খরচ বেড়েছে প্রায় ৬২ শতাংশ।
বুয়েটের অধ্যাপক মোহাম্মদ তামিম বলেন, আগামী কয়েক বছরে কিছু প্ল্যান্টের মেয়াদ বা চুক্তি শেষ হবে। তাই নির্মাণাধীন প্ল্যান্টগুলোর কাজ অব্যাহত রাখতে হবে। অন্যথায় ২০৩০ সালের দিকে আবারও ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিদ্যুতের দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আলোচনার আহ্বান জানান জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। এ ছাড়া, এলএনজি আমদানি কমিয়ে নিজস্ব গ্যাস উত্তোলন বাড়ানোর পরামর্শ তাদের।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. ইজাজ হোসাইন বলেন, ডলারের দাম বাড়তে থাকলে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়তেই থাকবে। জমিতে কৃষির চেয়ে সোলার উৎপাদন লাভজনক।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সোলার অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি এসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী নুরুল আক্তার, কনফিডেন্স গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ইমরান করিম।