আসন্ন বিশ্ব ইজতেমায় সিরিয়া, লেবানন কয়েকটি দেশের অতিথিদের ভিসা দিতে কঠোর থাকবে সরকার। যেসব দেশের উগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠী ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত, ওই সব দেশের অতিথিদের বাংলাদেশে আসার ব্যাপারে তাবলিগ জামাত শুরাকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
সম্প্রতি বিশ্ব ইজতেমা আয়োজন নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে অনুষ্ঠিত সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। সভার সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্রটি থেকে জানা গেছে, আসন্ন বিশ্ব ইজতেমায় সিরিয়া, ইয়েমেন, নাইজেরিয়া, ইরাক, সোমালিয়া, লেবানন, আফগানিস্তান, সুদান, লিবিয়া, শাদ, মালি, তিউনিসিয়া, ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েলের মতো দেশগুলোর অতিথিদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার কঠোরতা অবলম্বন করবে।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সব বিদেশি মেহমানের তালিকা, নাম, পাসপোর্ট নম্বর, জাতীয়তা, জন্ম তারিখ, পাসপোর্ট ইস্যুর তারিখ এবং মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখসহ সব তথ্য আগামী ২০ ডিসেম্বরের আগে শুরায়ে নিজাম/তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ থেকে এসবিকে (স্পেশাল ব্রাঞ্চ) সরবরাহ করতে হবে। বিশ্ব ইজতেমায় আসা বিদেশি মেহমানদের অনুকূলে সাধারণভাবে ৩০ দিন পর্যন্ত ভিসা দেওয়া হয়। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে তাবলিগ জামাতের সুপারিশের ভিত্তিতে এক চিল্লার জন্য ৫০ দিন এবং তিন চিল্লার জন্য ১৩০ দিন ভিসা দিতে হবে।
বিদেশি মেহমানদের ভিসা দেয়ার আগে শুরায়ে নিজাম/তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের আমন্ত্রণপত্র এবং সংশ্লিষ্ট দেশের মারকাজের সুপারিশ যাচাই করে সঠিক পাওয়া গেলে ভিসা প্রদান করতে হবে। টিআই ভিসা নিয়ে মিয়ানমারের নাগরিকরা ইজতেমায় আসতে পারবেন, তবে এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, যেসব দেশের উগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠী ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছে সেসব দেশের মেহমানদের বাংলাদেশে আসার ব্যাপারে তাবলিগ জামাত শুরা কর্তৃক নিরুৎসাহিত করার ব্যবস্থা নিতে হবে। ভিসা অন-অ্যারাইভাল দেওয়ার ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ভিসা অন-অ্যারাইভাল, প্রদেয় ভিসার মেয়াদ, নো ভিসা ফি রিকয়ার্ড, বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ নেই এমন দেশের মুসল্লিদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের (নিরাপত্তা ও বহিরাগমন) নেতৃত্বে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
এদিকে গত ৩ ডিসেম্বর ইজতেমার বিদেশি অতিথিদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন শর্তের কথা উল্লেখ করে বিদেশে বাংলাদেশের সব মিশনে চিঠি পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ।
সেখানে বলা হয়েছে, যে কোনো অনাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে সিরিয়া, ইয়েমেন, নাইজেরিয়া, ইরাক, সোমালিয়া, লেবানন, আফগানিস্তান, সুদান, লিবিয়া, শাদ, মালি, তিউনিসিয়া, ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েলের মতো দেশগুলোর আবেদনকারীদের জমা দেওয়া প্রাসঙ্গিক নথিপত্র যথাযথ যাচাইয়ের পর ভিসা দেওয়া যেতে পারে।
বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাবলিগ জামাতের মাওলানা জুবায়েরুল আহসানের অনুসারীরা (শুরায়ে নেজাম) আয়োজন করবেন। আগামী ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব তাবলিগ জামাতের মাওলানা সাদের অনুসারীরা আয়োজন করবেন। দুই গ্রুপেরই ইজতেমা গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে হবে।