দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে দুর্নীতি। এ ছাড়াও প্রশাসনিক অদক্ষতা, অবকাঠামোর দুর্বলতা, মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রাবাজারের অস্থিরতায় ব্যবসায় জটিলতা বেড়েছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি)।
রোববার ২৯ জানুয়ারি সংস্থাটির ধানমন্ডির কার্যালয়ে মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ ব্যবসায় পরিবেশ ২০২২: উদ্যোক্তা জরিপে এসব তথ্যতুলে ধরেন গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
জরিপে উঠে এসেছে, গত বছর দেশে ব্যবসার পরিবেশ আরও খারাপ হয়েছে। এছাড়া বড় প্রতিষ্ঠানের আগ্রাসনে বাজারে হুমকিতে দেশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসার পরিবেশ নিয়ে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম এখন আর সূচক প্রকাশ করছে না। তবে গতবছরও বিশ্বের ১২১ দেশের প্রায় ১২ হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির মতামত সংগ্রহ করেছে তারা। গবেষণা সংস্থা সিপিডি, সংস্থাটির সাথে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে গত বছর এপ্রিল-জুলাই পর্যন্ত দেশের বেসরকারি খাতে এক জরিপ চালায়।
যেখানে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের কৃষি, উৎপাদন ও সেবা খাতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৭৪ কর্মকর্তার তথ্য নেওয়া হয়। তাদের মতে, নতুন অবকাঠামোর প্রত্যাশিত সুফল মিলছেনা, ব্যাংক ব্যবস্থার ওপর আস্থা কমছে, বাড়ছে রাজনৈতিক অস্থিরতার আশঙ্কাও।
এর মধ্যে জরিপের অংশ নেওয়া দুই-তৃতীয়াংশ বা ৬৪ দশমিক ৬ শতাংশ কর্মকর্তা দুর্নীতিকে ব্যবসার বড় বাধা হিসেবে উল্লেখ করেন। কোন কোন জায়গায় দুর্নীতি হচ্ছে, সেটিও জরিপে উঠে এসেছে। ৬৪ শতাংশ কর্মকর্তা কর প্রদানে, ৫৪ শতাংশ ব্যবসায়িক লাইসেন্স নিতে, ৪৯ শতাংশ গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির সংযোগ নিতে এবং ৭৫ শতাংশ কর্মকর্তা আমদানি-রপ্তানিতে দুর্নীতির কথা বলেছেন।
এদিকে বিশ্বব্যাংকের তথ্য বলছে, এসএমই খাতে আরও ২৮০ কোটি ডলার বিনিয়োগ দরকার। সেই সাথে বড় শিল্পগোষ্ঠীর চাপে ছোটরা বাজারে টিকতে পারছে না বলে মত গবেষকদের।
সম্প্রতি বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ায় মূল্যস্ফীতি আরও বৃদ্ধির পাশাপাশি, রপ্তানি আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা তুলে ধরেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
সংস্থাটির মতে, দেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে করপোরেট সংস্কৃতির চর্চা বাড়লেও, নিয়োগে স্বজনপ্রীতি, পরিবেশগত তথ্যপ্রকাশ না করার মত দুর্বলতা এখনও প্রকট।