বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি দেশবাসীর অনেক প্রত্যাশা। আমরা আশা করি এ সরকার আওয়ামী সরকারের পুনরাবৃত্তি করবে না। এ সরকার মানুষের কাছে আরো বেশি প্রসারিত হতো যদি দ্রুত একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতো। সরকারের কেউ কেউ বলছেন এত তাড়া কিসের।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগতো ১৫ বছর জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত রেখেছে। কেড়ে নেওয়া হয়েছিল মানুষের অধিকার। শেখ হাসিনার আমলে নির্বাচনের দরকার ছিলো না। কে এমপি হবেন, চেয়ারম্যান হবেন সব নির্ধারণ করতো হাসিনা। নমিনেশন পেলেও পাস। আর পাস করলেই করা যেতো লুটপাট ও দখলবাজি। এরপর শুরু হতো নিজেরাই মারামারি, খুনাখুনি করতো। শেখ হাসিনার একক সিদ্ধান্তেই মানবপাচারকারী, স্বর্ণ চোরাকারবারি এবং ডাকাতও এমপি হয়েছেন।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের নিচতলায় জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, নিউইয়র্কে যেখানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মত ধনী ব্যক্তিরা বসবাস করেন সেখানেও আওয়ামী লুটেরাদের প্লট-ফ্লাট রয়েছে। চাঁদপুরে মাঠের পর মাঠ দখল করেছে দিপু মনি। তারা জানতো এসব অপকর্মের বিচার নেই।
তিনি বলেন, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে জানা, অনিয়মকে না বলাই সংস্কার। সরকার প্রধান যদি কাউকে অন্যায়ভাবে জেল দিতে বলেন, সাজা দিতে বলেন আর বিচারক যদি না বলে এটিই সংস্কার। ডিসি এসপিরা যদি মন্ত্রী এমপির অন্যায় আদেশ না শুনে সঠিক পথে কাজ করে এটিই সংস্কার। যেটি শেখ হাসিনার আমলে হয়নি। খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে নিম্ন আদালত ৫ বছর সাজা দিলো। উচ্চ আদালত তা ১০ বছর করলো। নিম্ন আদালতে যে ৫ বছর সাজা দিলো তাকে পদন্নোতি দেওয়া হলো, আবার যে বিচারপতি ১০ বছরের সাজা দিলো তাকে আপীল বিভাগের বিচারপতি করে পুরস্কৃত করা হয়েছিলো। আর যে বিচারক একটি মিথ্যা মামলায় তারেক রহমানকে খালাস দিয়েছে তাকে দেশ ছাড়া করেছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আজকে চুরি-ছিনতাই বেড়ে গেছে। নয়জন মানুষ ছিনতাইকারীদের হাতে নিহত হলো। সরকার প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করতে পারছে না। আমরা কিছু বললে বলেন রাজনীতিবিদরা ৫৪ বছরে কিছুই করতে পারেনি। ৭১, ৯০ এবং ২৪ সবকিছুই রাজনীতিবিদদের সমন্বয়েই হয়েছে। আপনারা (অন্তবর্তীকালীন সরকার) বিদ্যুৎ বন্ধ করে সংস্কারের মাস্টারপ্লান করবেন সেটি বিশ্বাসযোগ্য নয়। দেশ ও জনগণের আপনাদের প্রতি যে আস্থা ও বিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে তা বজায় রাখুন।
তিনি বলেন, সম্প্রতি তথ্য পাচ্ছি বাংলাদেশের অনেক গুম-খুনের সাথে ভারত জড়িত। কানাডার শিক নেতা খুন করেছে কারা? বাংলাদেশের অনেক গুম-খুনের সাথে ভারত যে জড়িত তা অস্বীকার করা যাবে না। তার প্রমাণ প্রমাণ আমাদের সালাউদ্দিন আহমেদ। আওয়ামী লীগের সাথে ভারতের এতই গভীর বন্ধুত্ব যে আওয়ামী লীগের অনেক দায় ভারত নিয়েছে। ভারত এবং পতিত আওয়ামী লীগ অনেক দাবার চাল দিবে, সাবধান থাকতে হবে।
মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক কর্ণেল অব. জয়নুল আবেদীন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সৌদি আরব বিএনপির সভাপতি আহমেদ আলী মুকিত, কেন্দ্রীয় নির্বাহীর কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ।