বাংলাদেশ শিল্পকলা অ্যাকাডেমির সাবেক মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীসহ ২৪ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের করা মামলায় তাদের বিরুদ্ধে এই আদেশ দেয়া হয়।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়া দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়া অন্য আসামিরা হলেন- শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক (প্রশাসন) জাহাঙ্গীর হোসেন চৌধুরী, কালচারাল অফিসার আল মামুন, মো. হামিদুর রহমান, বেগম সুদীপ্তা চক্রবর্তী, হাসান মাহমুদ, বুনা লায়লা মাহমুদ, সহকারী পরিচালক (বাজেট ও প্ল্যানিং) সামিরা আহমেদ, স্টেজ ম্যানেজার রহিমা খাতুন, গাইড লেকচারার মো. মাহাবুবুর রহমান, ইন্সট্রাকটর (সংগীত ও যন্ত্র) বেগম মীন আরা পারভীন, ইন্সট্রাকটর (নৃত্য) প্রিয়াংকা সাহা, যন্ত্রশিল্পী (গ্রেড-৩) নারায়ণ দেব লিটন ও মোহাম্মদ জিয়াউল আবেদীন, নৃত্যশিল্পী (গ্রেড-৩) লায়লা ইয়াসমিন, মিফতাহুল বিনতে মাসুক, আলকা দাশ প্রাপ্তি ও সুমাইয়া তাবাসসুম খানম, কণ্ঠশিল্পী রোকসানা আক্তার রূপসা, আবদুল্লাহেল রাফি তালুকদার, মো. সোহানুর রহমান, আবিদা রহমান সেতু, মোহনা দাস এবং ক্যামেরাম্যান (জনসংযোগ) মো. রুবেল মিয়া।
২০১১ খ্রিষ্টাব্দের সালে প্রথম শিল্পকলার মহাপরিচালক পদে নিয়োগ পান লাকী। এরপর টানা ৭ বার সে পদে তার মেয়াদ বাড়ানো হয়। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ১২ আগস্ট শিল্পকলার পদ ছেড়ে দেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শিল্পকলা অ্যাকাডেমির হর্তাকর্তা হয়ে বসে থাকা লাকীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। ১৩ বছরের বেশি সময় অ্যাকাডেমির মহাপরিচালক থাকা অবস্থায় নিজের ইচ্ছায় হয়েছে নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি ও কেনাকাটাসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে নাম জড়িয়েছে তার।
সোমবার দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। এ সময় দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মীর আহমেদ আলী সালাম শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ৬ অক্টোবর দুদকের উপ-পরিচালক সুমিত্রা সেন বাদী ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী এবং পরিচালক (প্রশাসন) জাহাঙ্গীর হোসেন চৌধুরী তাদের কাছে সংগৃহীত এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠানো বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার নম্বরপত্রে পরস্পর যোগসাজশে জালিয়াতি ও প্রতারণার আশ্রয় নেন। আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে লিখিত পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ প্রার্থীদের নম্বরপত্রে নম্বর বাড়িয়ে অবৈধভাবে ১০টি পদে ২৩ জন প্রার্থীকে নিয়োগ দিয়েছেন।
পরে লিখিত পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ প্রার্থীদের উত্তীর্ণ দেখিয়ে বিভিন্ন পদে নিয়োগদান করে তাদের বেতন ভাতা বাবদ সরকারি তহবিল থেকে নেওয়া ৮ কোটি ২৮ লাখ ৪৯৫ টাকা উত্তোলন করে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেন। এতে তারা দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ৪৬৮, ৪৭১, ১০৯ ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।