অনেকদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাবেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। কয়েকবার বিদেশ যাত্রার দিনক্ষণ ঠিক হলেও বা বাতিল হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের বিদেশে চিকিৎসার ব্যাপারে দীর্ঘদিনের ব্যাপক আলোচনার পর অবশেষে সফরের চূড়ান্ত সূচি তৈরি হয়েছে।
জানা গেছে, নতুন বছরের শুরুতেই ৭ জানুয়ারি লন্ডন যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন, সঙ্গে যাবেন ১৬ সদস্যের প্রতিনিধিদল।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) বিএনপির দায়িত্বশীল একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ডক্টর এনামুল হক চৌধুরী জানান, ৭ জানুয়ারি লন্ডন যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আপাতত সেখানেই চলবে চিকিৎসা।
জানাগেছে, খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাতজন চিকিৎসকসহ ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল লন্ডন যাবেন। যার মধ্যে রয়েছেন—বেগম জিয়ার প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান, বিএনপির চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ডা. মো. এনামুল হক চৌধুরী, তাবিদ মোহাম্মদ আওয়াল, ফখরুদ্দীন মোহাম্মদ সিদ্দিক, মো. শাহাবুদ্দীন তালুকদার, নুরুদ্দীন আহমাদ, মো. জাকির ইকবাল, মোহাম্মদ আল মামুন, শরিফা করিম স্বর্ণা, চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা এবিএম আব্দুস সাত্তার, মো. মাসুদুর রহমান, এসএম পারভেজ, ফাতেমা বেগম এবং রুপা শিকদার।
৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিল রোগে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন। তিনি রাজধানীর বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছেন।
চেয়ারপারসনের একজন ব্যক্তিগত চিকিৎসক জানান, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দুটি টিমে হবে। প্রথম টিমে তার চিকিৎসা হবে লন্ডনে। এরপর তাকে যুক্তরাষ্ট্রে নেয়া হবে। এরইমধ্যে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
তিনি জানান, সবকিছু ঠিক থাকলে চিকিৎসা শেষে বিএনপি চেয়ারপারসন সৌদি আরবে ওমরাহ পালন শেষে দেশে ফিরবেন।
এর আগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে সাবেক আওয়ামী সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন নিম্ন আদালত পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। পরে উচ্চ আদালত ওই সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করে দেন। পরবর্তী সময়ে সরকারের নির্বাহী আদেশে তার জেলমুক্তি হলেও খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়। গুরুতর অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার জন্য বারবার আবেদন করার পরও তা নানা অজুহাতে প্রত্যাখ্যান করে সাবেক সরকার। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে শেখ হাসিনা উৎখাত হওয়ার পর বেগম খালেদা জিয়া সব অভিযোগ থেকে খালাস পেয়েছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের বড় ছেলে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ১৬ বছর ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। সর্বশেষ ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে লন্ডনে মা-ছেলের সাক্ষাৎ হয়। দীর্ঘ আট বছর পর আবার মা-ছেলের সাক্ষাৎ হতে যাচ্ছে। খালেদা জিয়ার এই সফরে তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে বিএনপির দুই শীর্ষ নেতার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।