তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, এই সরকার এক অর্থে একটি সাংবিধানিক সরকারো নয় আবার বিপ্লবী সরকারো নয়। এজন্য, সরকারের জনপ্রিয়তা থাকলেও প্রশাসনিক অসহযোগিতা দেখা যাচ্ছে।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তিনি একথা বলেন।
তিনি জানান, বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো দীর্ঘদিন ধরেই সংস্কারকে সামনে রেখে আন্দোলন করছিলো। এই অভ্যুত্থানও একটি ধারাবাহিকতার মধ্য দিয়ে হয়েছে। যারা এই আন্দোলনে জীবন দিয়েছে, আহত হয়েছে, যারা হাত-পা, চোখ হারিয়েছে তারা তাদের কাজটি করে ফেলেছে। আমরা যারা জীবিত আছি তাদের আন্দোলন দিয়ে নয় বর্তমান দিয়ে মূল্যায়ন করতে হবে। বর্তমানে আমরা কি করছি এবং ভবিষ্যতে কি করবো এটি নিয়ে ভাবতে হবে।
তিনি বলেন, বিগত সরকারের আমলে ক্ষমতা হস্তান্তরের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ছিল না। আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থা থেকে শুরু করে আরও যে প্রতিষ্ঠানগুলো দরকার সেগুলো শক্তিশালী নয়। নির্বাচনের আগে এই প্রশ্নের সুরাহা হওয়া দরকার যে, এরপর যে সরকার আসবে তার ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়াটা কেমন হবে। সহিংস এবং প্রতিহিংসার রাজনিতী যেন বাংলাদেশে ফিরে না আসে। সামনের বাংলাদেশে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে করতে এই সরকার কাজ করছে।
তথ্য উপদেষ্টা জানান, অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছে। এই ঐক্য এখনও রয়েছে। এই ধরনের বাংলাদেশই আমরা দেখতে চাই। বাংলাদেশ প্রশ্নে বাংলাদেশের সবাই যে এক কাতারে আসতে পারি তা আমরা এর আগে দেখতে পাইনি। আমাদের কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ে ঐক্য ধরে রাখতে হবে।
সংবিধান ইস্যুতে তিনি জানান, আমরা একটা নতুন সংবিধান বা সংবিধান পুনর্লিখনের কথা বলছি। আমরা মনে করি যে মুজিববাদী বন্দোবস্তের মধ্য দিয়ে যে সংবিধান রচিত হয়েছিল সেখানে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হয়নি। এবং বাংলাদেশকে নিয়ে প্রতিবেশি দেশের ‘ইঞ্জিনিয়ারিং’ বিগত সংবিধানে প্রতিফলিত হয়েছে। শুধু সংবিধান নয় আরও অনেক কিছুতে তা প্রতিফলিত হয়েছে। আমরা যদি নতুন সংবিধানের মাধ্যমে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রতিফলন ঘটাতে না পারি তাহলে বাংলাদেশের ভবিষ্যত রাজনৈতিক যাত্রা ব্যাহত হবে।
বৈদেশিক নিতী নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের বৈদেশিক নিতীতে ঐক্যমত্য প্রয়োজন। বাংলাদেশের ইতিহাসে দেখা যায় একেক দল আসলে বৈদেশিক নিতী একেক রকম হয়ে যায়। ভবিষ্যত বাংলাদেশের জন্য বৈদেশিক নিতী নতুনভাবে পরিকল্পনা করা উচিত। আমাদের অর্থনিতী এবং ব্যবসায় ঐক্যমত্য প্রয়োজন।
তিনি আরো জানান, এই সরকার এক অর্থে একটি সাংবিধানিক সরকার নয় আবার বিপ্লবী সরকারও নয়। ফলে এই সরকারের জনপ্রিয়তা থাকলেও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে আমলাদের হুমকি দিতে দেখা যাচ্ছে এই সাহস তারা বিগত সরকারের আমল থেকেই পেয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।