রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকদের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সেখানে সাঁজোয়া যান ও জলকামান মোতায়েন করেছে পুলিশ।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে এ সমাবেশ শুরুর পর সেখানে প্রস্তুত রাখা হয় পুলিশের সাঁজোয়া যান ও জলকামান। একই সঙ্গে পুলিশের উপস্থিতিও বাড়ানো হয়েছে।
ডক্টরস মুভমেন্ট ফর জাস্টিসের (ডিএমজে) ব্যানারে এ সমাবেশে যোগ দিয়েছেন বিভিন্ন মেডিক্যালের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকরা। সেখানে সাঁজোয়া যান ও জলকামান দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকদের কেউ কেউ।
আরো পড়ুন: ফের শাহবাগ অবরোধ ট্রেইনি চিকিৎসকদের
শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিএসএমএমইউ ও বিসিপিএসের অধিভুক্ত পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকদের ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে সমাবেশকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। তবে যেকোনো মূল্যে দাবি আদায় করেই স্বাস্থ্য সেবায় ফিরে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন ট্রেইনি চিকিৎসকরা।
এদিকে চিকিৎসকদের এ আন্দোলনে মানুষের দুর্ভোগো বেড়েছে। পাশাপাশি চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে হাসপাতালে। শাহবাগের মূল সড়ক অবরোধের কারণে আশপাশের এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছি। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দিয়েছি। কিন্তু তারা কোনো অবস্থাতেই শাহবাগ মোড় ছাড়বেন না বলে জানিয়েছেন।
প্রজ্ঞাপন ছাড়া কোনোভাবেই শাহবাগ মোড় ছাড়বেন না জানিয়ে ডক্টরস মুভমেন্ট ফর জাস্টিসের সাধারণ সম্পাদক ডা. নুরুন্নবী বলেন, আধা ঘণ্টার মধ্যে শাহবাগ মোড় না ছাড়লে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, চিকিৎসকদের অ্যাপ্রোনে যদি এক ফোঁটা রক্তের দাগ লাগে, এর পরিণাম হবে ভয়াবহ। আমাদের চাপ দিয়ে লাভ নেই। কীভাবে দ্রুত প্রজ্ঞাপন দেবেন, সেটা নিয়ে ভাবেন।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শুরু হওয়া এ সমাবেশে চিকিৎসকরা বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করে আসছি। নেতৃস্থানীয় প্রত্যেক জায়গায় আমরা গিয়েছি। সমাধান না পেয়ে বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছি। আপনারা কি ডাক্তারদের অবদান অস্বীকার করতে পারবেন? চিকিৎসকরা রাস্তায় ভূমিকা রাখার পাশাপাশি হাসপাতালে রাতদিন সেবা দিয়েছেন।’
সমাবেশে বক্তব্য দেন এবি পার্টির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওয়াহাব মিনার। তিনি তাঁর দলের পক্ষ থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের মধ্যে অনৈক্য থাকলে দাবি আদায় করা যাবে না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকবো।’
তিনি বলেন, ‘আগের আমলে আমরা ছিলাম রাজাকার, এখন হয়ে গেছি আওয়ামী লীগ। এগুলো তো আমরা বুঝি। চেয়ার পার্মানেন্ট না, পার্মানেন্ট হচ্ছে নৈতিকতা।’
এ সময় ডিএমজে সাধারণ সম্পাদক ডা. নুরুন্নবী বলেন, ‘দাবি পূরণে যত বিলম্ব হবে, আমরা তত ঐক্যবদ্ধ হব, শক্তি সঞ্চয় করব। আমাদের চাপ দিয়ে লাভ নেই। তা না করে কীভাবে তাড়াতাড়ি প্রজ্ঞাপন দেবেন, সেটা নিয়ে ভাবেন। আমরা কারও দালাল নই।’