সচিবালয়ে আগুনের কারণে ব্যবহার অনুপযুক্ত হওয়ায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ১৩, ১৪ ও ১৫ তলার তিনটি ফ্লোর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ব্যবহারের জন্য দেয়া হয়েছে। আজ রোববার থেকে সেখানে মন্ত্রণালয়ের অফিস করার কথা ছিল। তবে আজকেও ধোয়া-মোছা ও সংস্কারের কাজ চলছে।
রোববার দুপুরে ১৪ তলায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সচিবের কক্ষ প্রস্তুত করে রঙ ও ধোয়া-মোছার কাজ করতে দেখা গেছে। তিনটি ফ্লোরের কক্ষের মধ্যে কে কোন কক্ষে বসবেন কাগজে তা কক্ষের সামনে সাটানো হয়েছে। অফিস করার জন্য আসবাবপত্র আনা হচ্ছে। সব কক্ষের জন্য ফ্যান ও ইউটিলিটির সুবিধা স্থাপন করা হচ্ছে।
ডিএসসিসির অঞ্চল-১ এর সহকারী প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন, ১৪ ও ১৫ তলার কক্ষগুলো প্রায় দেড় থেকে দুই বছর পরিত্যক্ত ছিল। এখন সেগুলো সংস্কার করে ধোয়া-মোছা ও রঙের কাজ চলছে।
ডিএসসিসির সচিব মোহাম্মদ বশিরুল হক ভূঞা বলেন, ১৪ ও ১৫ তলায় ডিটিসিএ প্রজেক্ট ছিল। দেড়-দুই বছর আগে তারা তাদের ভবনে চলে গেছে। তখন থেকেই এ দু’টি ফ্লোর ফাঁকা। ১৩ তলার অর্ধেক অংশে আমাদের দুই-একটি বিভাগ ছিল সেগুলো নিচে ফাঁকা জায়গায় স্থানান্তর করা হয়েছে। আজকের মধ্যে ধোয়া-মোছা ও ছোটখাট সংস্কার কাজ শেষ হবে।
তিনি বলেন, ‘তারা (স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়) দুই মাসের জন্য আসছেন। পরিস্থিতি ঠিক হলে আবার চলে যাবেন। তবে বৃহত্তর স্বার্থে মন্ত্রণালয় ডিএসসিসির ভবনে আসলে একই ভবনে থাকায় আমাদেরও দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হবে। কাজেও গতি বাড়বে।’
বাংলাদেশ সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে বুধবার রাতে আগুন লাগে। প্রায় ছয় ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। রাত ১টা ৫২ মিনিটে সচিবালয়ের ওই ভবনে আগুন লাগার সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস। এর মিনিট দুয়েক পরই সচিবালয়ে অবস্থিত ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটটি আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করে। আগুনের তীব্রতা বাড়লে একে একে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট অগ্নিনির্বাপণ কাজে যোগ দেয়।
ভোর পাঁচটার পর ফায়ার সার্ভিসের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে পোস্ট কড়া ভিডিওতে দেখা যায়, সচিবালয়ের সাত নম্বর ভবনের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। বাইরে থেকেও আগুনের শিখা দেখা যাচ্ছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা করছে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। প্রাথমিক পর্যায়ে আগুন লাগার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়। এরপর সচিবালয় এলাকায় মোতায়েন করা হয় বিজিবি সদস্যদের।
ওই ভবনে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়সহ বিভাগের অফিস রয়েছে। এই ভবনে রয়েছে- পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়; যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়; ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়; ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ; শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়; অর্থ মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ; সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ।