ভারসাম্য রেখেই পরাশক্তি দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে অন্তর্বর্তী সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকেরা। সাবেক কূটনীতিকেরা বলছেন, পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আসন্ন চীন সফর দেশের অর্থনীতি ও কূটনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। এ ছাড়াও রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আলোচনা হতে পারে।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র আমন্ত্রণে আগামী ২০ জানুয়ারি তিন দিনের সফরে বেইজিং যাচ্ছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে এই প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফরে আমন্ত্রণ জানাল কোনো দেশ। নানা ইস্যুতে যখন ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে, তখন চীনের এমন কূটনৈতিক তৎপরতা ঘিরে চলছে নানামুখী আলোচনা। এ ক্ষেত্রে ঢাকাকে বিশেষ সর্তক থাকার পরামর্শ বিশ্লেষকদের।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মাসুদ রাজ্জাক বলেন, ‘বিশেষত আমাদের যারা শক্তিশালী প্রতিবেশী আছে অবশ্যই তাদের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রাখা প্রয়োজন। তবে সেটা অবশ্যই আমাদের সুবিধাকে বাদ দিয়ে না। আমাদের সুবিধাকে জলাঞ্জলি দিয়ে প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখব এটা আসলে ঠিক না। এখানে ব্যালেন্স করার একটা বিষয় রয়েছে। ব্যালেন্স করেই সম্পর্ক ঠিক রাখতে হবে।’
বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় বরাবরই পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে চীন। এই ধারাবাহিকতায় অবকাঠামো উন্নয়নে সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করে আসছে দেশটি। এ ছাড়া রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মধ্যস্থতার দায়িত্বে রয়েছে বেইজিং। সেজন্য অর্থনৈতিক-কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা স্বার্থেই বেইজিংকে পাশে রাখতে চায় ঢাকা। পররাষ্ট্র উপদেষ্টার এবারের চীন সফরে এ বিষয়ে আলোচনার সম্ভাবনা দেখছেন সাবেক কূটনীতিকেরা।
সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘বর্তমান আর্থিক সংকট নিরসনের জন্য চীন আমাদের কিছুটা আর্থিক সহায়তা করতে পারে। যেটা আগের সরকার প্রধানের সফরের সময় আলোচনা হয়েছিল।’
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে চীনকে এখনই বড় ধরনের কোনও প্রতিশ্রুতি দেওয়া কঠিন বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে, আসন্ন চীন সফর নিয়ে সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমি চীনে যাচ্ছি, আমাকে নিমন্ত্রণ করেছে। আমি যাচ্ছি সেখানে। আমাদের যেসব ইস্যু আছে সেগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা করব। কী ইস্যু আছে আমি সেগুলো এখন বলব না।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘পররাষ্ট্রসচিব একটা আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের আহ্বান করেছে, সেখানে আমরা আলোচনা করব কী কী অর্জন হওয়ার মতো বিষয় রয়েছে। আর কী কী বিষয়ে তাদের কাছ থেকে সমাধান পেতে পারি।’