বাংলাদেশে ইউরোপীয় দেশগুলো যাতে ভিসা সেন্টার খোলে, সেই চেষ্টা চলমান আছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আলম।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের চীন সফর উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
রফিকুল আলম বলেন, ইউরোপের যে দেশগুলোর দূতাবাস বাংলাদেশে নেই, তারা যাতে বাংলাদেশে ভিসা সেন্টার স্থানান্তরিত করে, সে বিষয়ে কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশ ওই দেশগুলোকে অনুরোধ জানিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে বুলগেরিয়া বাংলাদেশে ভিসা সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। রোমানিয়া ক্ষেত্রবিশেষে কখনো ভিয়েতনাম, কখনো বা থাইল্যান্ড থেকে ভিসা নেয়ার ব্যবস্থা করেছে।
তবে এই ব্যবস্থা সম্পূর্ণ অস্থায়ী উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ইউরোপের আরো কয়েকটি দেশ যাতে বাংলাদেশে ভিসা সেন্টার খোলে, সে জন্য আমাদের প্রচেষ্টা চলমান আছে। তবে এখানে একটি বিষয় বিবেচনায় আনতে হবে যে, এমন ব্যবস্থা গ্রহণের আগে ওই দেশগুলোকেও অনেক ধরণের অনুমোদন নিতে হয়, এ ধরণের সিদ্ধান্ত কোনো দেশই তাড়াহুড়ো করে নিতে পারে না।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে ধৈর্য ধারণ করতে সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আগামী ২০ থেকে ২৪ জানুয়ারি দ্বিপাক্ষিক সফরে চীন যাবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। সেখানে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। এতে দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাৎসরিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যদিও এই বাণিজ্য ভারসাম্য বাংলাদেশের পক্ষে অনুকূল নয়। এই সফরে বাণিজ্য ভারসাম্য পুনর্গঠনের পাশাপাশি বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে চীনা বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহতদের ১১ জনকে বিদেশে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন ইতোমধ্যে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাংলাদেশে ফেরত এসেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, মোজাম্বিকে চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটে সেখানে বসবাসরত বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বিক্ষোভকারীদের তাণ্ডবে ইতোমধ্যে প্রায় ৫০০ বাংলাদেশি মালিকানাধীন দোকান লুটপাট ও সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছে।
মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, মোজাম্বিকের মাপুটো, নাম্পুলা এবং জাম্বেজিয়া প্রভিন্সে বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিক সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আফ্রিকার দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশিরা মূলত ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তাদের বেশিরভাগই গ্রোসারি দোকান পরিচালনা করেন। এছাড়া, বেশ কিছু বাংলাদেশি কৃষিখাতে নিয়োজিত আছেন।