অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে আজই সংস্কারের রূপরেখা তুলে ধরবে চার কমিশন। নির্বাচন পদ্ধতি, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও আইনসভার সংস্কার নিয়ে নানা প্রস্তাবনা থাকতে পারে কমিশনগুলোর রিপোর্টে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের পর সংস্কারের বিষয়ে চূড়ান্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সরকার। আর ফেব্রুয়ারিতে রিপোর্ট দেবে অন্য কমিশনগুলোও বলে জানা গেছে।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দায়িত্ব নেয় অর্ন্তবর্তী সরকার। কর্তৃত্ববাদী দুঃশাসনে অনিয়ম, দুর্নীতির বেড়াজালে বিপর্যস্ত দেশের আইন, বিচার ও শাসন বিভাগসহ দেশের সব খাত। রাষ্ট্র মেরামতের লক্ষ্যে সংস্কার প্রস্তাব তৈরির জন্য অন্তর্বর্তী সরকার দুই ধাপে ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করে।
প্রথম ধাপে গত অক্টোবর মাসে জনপ্রশাসন, পুলিশ, দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা, সংবিধান ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন গঠিত হয়। দ্বিতীয় ধাপে গঠিত হয় গণমাধ্যম, স্বাস্থ্য, শ্রম, নারীবিষয়ক ও স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা সংস্কারে আর পাঁচটি কমিশন।
তিন মাসে নানা অংশীজনদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে সংস্কার কমিশনগুলো। বৈঠক আর আলোচনায় উঠে আসে বিভিন্ন খাতের পুর্নগঠনের নানা প্রস্তাবনা ও সুপারিশ। এগুলো যাচাই বাছাই শেষে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে চুড়ান্ত রিপোর্ট প্রকাশের জন্য সময় ধার্য থাকলেও কাজ শেষ না হওয়ায় আজ (১৫ জানুয়ারি) পর্যন্ত বাড়ানো হয় প্রথম ধাপে গঠিত কমিশনগুলোর মেয়াদ।
সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার দফতর থেকে জানানো হয় সংস্কারের রুপরেখা সরকারের কাছে তুলে দিতে প্রস্তুত প্রথম ধাপে গঠিত কমিশনগুলো। চারটি সংস্কার কমিশন তাদের রিপোর্ট প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তুলে ধরবে।
এদিকে ১৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস ইউংয়ের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, বুধবার (১৫ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ৪টি সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে। কমিশনগুলোর প্রতিবেদনের সারমর্ম সবার জন্য উন্মুক্তও করা হবে।
জানা যায় যে, নির্বাচন পদ্ধতি, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, সংসদের কক্ষ বা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট হলে কোন কক্ষের নির্বাচন কীভাবে হবে এ নিয়ে স্পষ্ট প্রস্তাবনা থাকতে পারে রিপোর্টে। এছাড়া দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের রাশ টেনে ধরতে করণীয় ঠিক করতে নানা দিক নির্দেশনাও থাকতে পারে সংস্কার কমিশনের সুপারিশে।
আর প্রতিবেদন পাওয়ার পর সংস্কাররের নানা প্রস্তাবনা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের পর সরকার সংস্কারের বিষয়ে চূড়ান্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের জন্য ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে। আগামী মাসে বাকি কমিশনগুলো তাদের প্রতিবেদন দেবে।