ব্যক্তিগত স্বার্থে সাংবিধানিক ও আইনগত ক্ষমতার অপব্যবহার ও ঘুষ লেনদেনকে অবৈধ ঘোষণা এবং আইনে কালো টাকা সাদা করার বৈধতা স্থায়ীভাবে বন্ধ করাসহ ৪৭ দফা সুপারিশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কার কমিশন।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে এসব সুপারিশ করেছে এ কমিশন।
এ বিষয়ে দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, দুদককে আরও গতিশীল করার জন্য আমরা স্বল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী ব্যবস্থা হিসেবে ৪৭টি সুপারিশ প্রস্তাব করেছি। আমরা বিশ্বাস করি যে, স্বল্পমেয়াদী সুপারিশ বাস্তবায়নে ছয় মাস, মধ্যমেয়াদী সুপারিশ বাস্তবায়নে ১৮ মাস ও দীর্ঘমেয়াদী সংস্কার বাস্তবায়নে ৪৮ মাস সময় লাগবে।
তিনি বলেন, দুদক বর্তমানে একটি বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। তবে এটিকে একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া প্রয়োজন।
দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, আমরা চাই দুদক স্বাধীন ও কার্যকর হোক। তবে, এই স্বাধীনতারও সীমা থাকতে হবে। আমরা সংস্কার সুপারিশ করেছি।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কমিশনের সদস্য সংখ্যা তিন থেকে পাঁচে বৃদ্ধি করার সুপারিশ করা হয়েছে। যার মধ্যে কমপক্ষে একজন নারী সদস্য অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। অতিরিক্তভাবে দুদকের কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত বিচারিক ও আর্থিক দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তিদেরও অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান আরো বলেন, সুপারিশের ভিত্তিতে একটি কার্যকর দুদক গড়ে তুলতে রাজনীতি ও আমলাতন্ত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে, না হলে দুদক কার্যকর হবে না।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। পরে একই মাসে দায়িত্ব গ্রহণের পর দুর্বল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে এবং জনমালিকানা, জবাবদিহিতা ও জনকল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য ১৫টি সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার।
এর মধ্যে সংবিধান, নির্বাচনী ব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন এবং দুদকের সংস্কারের জন্য প্রথম ছয়টি কমিশন ৩ অক্টোবর গঠিত হয়।
এর মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।