চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের অনেক প্রকল্পে চীনের বিনিয়োগ আছে। বিনিয়োগগুলো মূলত ঋণ আকারে। তার মধ্যে কিছু প্রকল্প চলমান।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। আগামী ২০ জানুয়ারি তিনদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে চীন যাবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। সে উপলক্ষে এ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।
এম তৌহিদ হোসেন বলেন, আলাপ আলোচনার মধ্যে প্রথমে ব্যবসায়িক বিষয়গুলো আসবে। আপনারা জানেন, অফিসিয়ালি চীন আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক অংশীদার। আনঅফিসিয়ালি ভারতকেও বড় অংশীদার বলা হয়। চীনের সঙ্গে আমাদের প্রধানত আমদানির সম্পর্ক এবং এগুলো আমাদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। কারণ আমাদের অনেক রপ্তানি সেই আমদানি পণ্যগুলোর ওপর নির্ভরশীল। কাজেই চীনের সঙ্গে আমাদের যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্কও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের অনেক প্রকল্পে চীনের বিনিয়োগ আছে। বিনিয়োগ মূলত ঋণ আকারে। তার মধ্যে কিছু প্রকল্প চলমান আছে। এছাড়া আরও অর্থনৈতিক আলোচনা আছে- যেমন আমরা ঋণের শর্তাবলী নিয়ে কথা বলব। এর মধ্যে সুদহার কমানো বা ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানো ইত্যাদি।
উপদেষ্টা বলেন, চীনের কাছে এটাও চাইবো যেন যখন আমরা এলডিসি থেকে গ্রাজুয়েট করব; তখন ইউরোপের মত তারাও যেন আমাদের জন্য তিন বছর শুল্কমুক্ত সুবিধা বহাল রাখে। আপনারা জানেন, এখনো চীন আমাদের অধিকাংশ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিচ্ছে। কিন্তু গ্রাজুয়েশনের পরে এটা পরিবর্তন হতে পারে, তাই এটি আমাদের আলোচনার মাধ্যমে আগেই ঠিক করে নিতে হবে। এছাড়া কিছু কালচারাল আলোচনা আছে। চীনের সঙ্গে সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। এ উপলক্ষে দুই দেশেই কিছু উৎসব আছে। সেগুলো নিয়েও আমরা কথাবার্তা বলব।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আমন্ত্রণে দেশটি সফর করবেন জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যার দিকে রওনা করবো। পৌঁছাতে ২১ তারিখ হয়ে যাবে। মূলত ২১, ২২ ও ২৩ জানুয়ারি এই তিন দিনের সফর। ২৪ তারিখ দেশে ফিরে আসবো।
সফরসূচি প্রসঙ্গ তিনি বলেন, ২১ জানুয়ারি রাজধানী বেইজিংয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে। তারপর সাংহাই যাব। সেখানে একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে হবে। এর বাইরে দুটি শিল্প কারখানা আমাদের দেখানো হবে। একটি বিদ্যুৎচালিত গাড়ির (ইভি) কারখানা এবং আরেকটি ফ্রুটস প্রিজারভেশন সংক্রান্ত। তাদের নতুন এসব টেকনোলজি আমাদেরকে দেখানো হবে কারণ এগুলো আমাদের দেশে কাজে আসতে পারে। তারপর সাংহাই থেকে সরাসরি দেশে ফিরে আসবো।
চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় ও গভীর করার লক্ষ্যে এ সফর একটি বড় সুযোগ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।