![‘মাত্রাতিরিক্ত সুশীলগিরি করবেন না’ ‘মাত্রাতিরিক্ত সুশীলগিরি করবেন না’](https://www.amaderbarta.net/media/imgAll/2023November/AMINUL-HAQUE-2502120700.jpg)
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক বলেছেন, ‘সুশীলগিরি ভালো। অন্তবর্তী সরকারের বিতর্কিত উপদেষ্টাদের স্পষ্টভাষায় পয়গাম দিতে চাই- মাত্রাতিরিক্ত সুশীলগিরি করবেন না। মব জাস্টিসের কথা আমাদের বোঝানোর চেষ্টা করবেন না।’
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে রাজশাহী নগরীর মাদ্রাসা মাঠে খেলাফত মজলিস রাজশাহী জেলা শাখা আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মামুনুল হক আরও বলেন, ‘২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের ৫ আগস্ট বাংলার মানুষ যখন সেই মহা সুসংবাদ পেল, দুপুর দুইটার দিকে শেখ হাসিনা পালিয়েছে। এক ঘণ্টার মধ্যে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া একটাই দৃশ্য মঞ্চায়িত হয়েছে। কোনো নেতার ঘোষণা লাগেনি, কোনো আলেমের আহ্বানের প্রয়োজন হয়নি, টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত যত ভাস্কর্য বা মূর্তি ছিল সব ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। তারা মুসলমানের জনপদ থেকে ভাস্কর্য নামক মূর্তি ভেঙে গুঁড়িয়েছে। কিন্তু হিন্দুদের মন্দিরে, তাদের উপসনালয়ে রক্ষিত মূর্তির গায়ে একটা ফুলের টোকাও দেয়নি। এ দুটি চিত্র বাংলাদেশের মানুষকে মনে রাখতে হবে।’
ভারতকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী দেশকে আমরা বলব- আমাদের এখান থেকে পলাতক শত শত খুনের মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি (হাসিনা)। যার বিরুদ্ধে গ্রেও পরওয়ানা জারি করেছে বাংলাদেশের আদালত। সেই পলাতক আসামিকে আপনারা প্রশ্রয় দিয়ে ক্ষান্ত হননি। তাকে আপনারা বধূর মতো যত্ন করে রেখেছেন। আপনাদের ১৬ বছর যে সার্ভিস দিয়েছে। গোটা বাংলাদেশটাকে আপনার হাতে তুলে দিয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যদি এভাবেই নাক গলাতে থাকে বাংলার মানুষ আপনাদের সঙ্গে সৌজন্যতামূলক কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখতে পারবে না। আপনাকে আমার দেশের পররাষ্ট্রনীতির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে হবে। কূটনৈতিক সৌজন্য রক্ষা করতে হবে। আর যদি আমার বাংলাদেশকে মনে করেন আপনার ক্রীতদাসী আমলার মতো, আর বাংলাদেশের স্বাধীন পতাকায় আপনারা অগ্নিসংযোগ করবেন, আমার আগরতলার উপ-হাইকমিশনে এভাবেই আক্রমণের পর আক্রমণ চালিয়ে যাবেন- বাংলার শাহজালালের সন্তানরা নীরবে বসে থাকবে না।’
খেলাফত মজলিসের আমির বলেন, ‘কলকাতায় নির্বাসিত ইসলামবিরোধী, চরম বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের প্রতি বাংলার মাটিতে বসে পীরিত দেখান, মনে রাখেন এ দেশের মানুষ সহনশীল। কিন্তু দুর্বল নয়। আগস্ট বিপ্লবের পরে ফ্যাসিবাদবিরোধী বাংলার মাটিতে বসে এ দেশের মুসলমানদের বুকের উপর দাঁড়িয়ে তসলিমা নাসরিনের মতো কুখ্যাত লেখিকাকে আবার বাংলাদেশের মাটিতে প্রকাশ্যে পুনর্বাসনের চেষ্টা করবে এ দেশের মানুষ কোনো দিন বরদাস্ত করবে না।’
খেলাফত মজলিসের আমির আরও বলেন, ‘আমরা ২০১৩ থেকে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত রাজপথে রক্ত দিয়ে আজ এ পর্যন্ত দাঁড়িয়েছি। আপনাদের কোনো করুণার ভিখারি আমরা নই। যদি আমাদের করুণার পাত্র মনে করেন ওপেন চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করলাম- আসুন আমাদের মোকাবিলা করে দেখুন, এত সহজ হবে না।’
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের এ নেতা বলেন, ‘এ দেশে আমরা ইসলাম ও এর গৌরব নিয়ে বাঁচব। মনে রাখতে হবে- ঐতিহাসিকভাবে বিগত ২৫০ বছরের ইতিহাস প্রমাণ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও ইসলাম একই সূত্রে গাঁথা। যদি বাংলাদেশে ইসলাম আক্রান্ত হয়, তাহলে স্বাধীনতা বিপন্ন হবে। সুতরাং দেশে যারা ইসলামবিরোধী, তারাই স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। যারা ইসলামকে সহ্য করতে পারে না, তারাই স্বাধীনতার দুশমন। আমরা ছাড় দেব, কিন্তু ছেড়ে দিয়ে কথা বলব না।’