
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, সংস্কার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন করলে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনসহ অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করে জামায়াতে ইসলামীর ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল। বৈঠক শেষে ব্রিফ করেন অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ইসির সঙ্গে নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করার বিষয়ে মতবিনিময় হয়েছে। সক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা ২৩ দফা দাবি জানিয়েছি। বিশেষ করে সংস্কার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন করলে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। সেই সময় দিতে জামায়াত প্রস্তুত।
তিনি বলেন, জনগণ চায় স্থানীয় সরকার সচল হোক, আমরাও জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চাই। এছাড়া আমরা সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের পক্ষে বলেছি। বাংলাদেশের জন্য এটি প্রয়োজন, সংসদ কার্যকরের জন্য প্রয়োজন। পাশাপাশি প্রবাসী ভোটারদের ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে বলেছি। এছাড়া বলেছি রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আইন বিধি কঠোর, তা বাতিল করা উচিত। সবার রাজনীতি করার অধিকার আছে বলেও জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, ৩০০ আসনে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত। প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ জামায়াতের নিবন্ধনের বিষয় আদালতে পেন্ডিং আছে। আমরা আশা করি ন্যায়বিচার পাব এবং দাঁড়িপাল্লা প্রতীক পাব।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে ছিলেন দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ. এইচ. এম হামিদুর রহমান আযাদ, বাংলাদেশ ল' ইয়ার্স কাউন্সিলের সভাপতি ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. জসীম উদ্দীন সরকার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট এস. এম. কামাল উদ্দীন, সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলী।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কে এম নূরুল হুদার কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। তৎকালীন ইসি সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমদের ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ অক্টোবর স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের ৪ নভেম্বর দলটিকে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী নিবন্ধন দেওয়া হয়েছিল। দলটি নিবন্ধন নম্বর পেয়েছিল ১৪। কিন্তু একটি মামলার রায়ে হাইকোর্ট ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে দলটির নিবন্ধন প্রক্রিয়া অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে। তাই নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিল করে।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিশিষ্ট বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন। তিনি এর আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের (পার-১) উপসচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডার/স্বাস্থ্য সার্ভিসের কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ নাসির উদ্দীনকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ও সহযোগী অধ্যাপক পদে বদলি/পদায়ন করা হলো।
প্রজ্ঞাপনে বদলি/পদায়নকৃত এই কর্মকর্তা আগামী ৩ কর্মদিবসের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করবেন। অন্যথায় পরবর্তী কর্মদিবসে বর্তমান কর্মস্থল থেকে তাৎক্ষণিক অব্যাহতি মর্মে গণ্য হবেন। অবমুক্তির সময় তিনি বর্তমান কর্মস্থল হতে ছাড়পত্র গ্রহণ করবেন এবং এইচআরএম ডাটাবেজ থেকে মুভ আউট হবেন এবং যোগদানের পর ন্যস্তকৃত বিভাগে/কর্মস্থলে মুভ ইন হবেন।
ডা. মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি শৈলকূপা পাইলট হাইস্কুল থেকে ৬টি লেটারসহ স্টারমার্ক নিয়ে এসএসসি পাস করেন এবং উপজেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে শৈলকূপা কলেজ থেকে স্টার মার্কসহ উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। তিনি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন এবং ১৭ বিসিএসর মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন। অতঃপর ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে সার্জারিতে এফসিপিএস এবং পরবর্তীতে প্লাস্টিক সার্জারিতে এমএস ডিগ্রি লাভ করেন। এছাড়াও তিনি যুক্তরাজ্যে হতে এফআরসিএস এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে এফএসিএস ডিগ্রি অর্জন করেন।
এছাড়াও একজন প্লাস্টিক সার্জন হিসেবে তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ,ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক, সিঙ্গাপুরসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং অসংখ্য আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে বৈজ্ঞানিক গবেষণা পত্র উপস্থাপনা করেছেন। একজন দক্ষ সার্জন এবং প্লাস্টিক সার্জারির একজন শিক্ষক হিসেবে তিনি ইতোমধ্যে সুনাম অর্জন করেছেন।
সর্বশেষ ২০২৪ এর জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় আহত রোগীদের চিকিৎসার জন্যে তিনি ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন। বিশেষত ১৮, ১৯ ও ২০ জুলাই টানা তিনদিন বাড্ডার একটি বেসরকারি হাসপাতালে একাই কমপক্ষে ১০০ রোগীর শরীরে অস্ত্রোপচার করেন। এজন্য তাকে তৎকালীন স্বৈরাচারী সরকারের রোষানলের সম্মুখীন হতে হয়। পরে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার জন্য গঠিত মনিটরিং সেলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।