
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বিগত সময়ে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দেশের মানুষের জীবন হরণ করা হয়েছে। দিনের পর দিন দেশের মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। মানুষ খুন হয়েছে, ন্যায্যবিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। (৫ মার্চ) জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশের ওপর প্রতিবেদন দাখিল করেছে। বাংলাদেশ সরকার সেখানে উপস্থিত ছিল। সেখানে শুনানিতে উঠে এসেছে ভয়াবহ চিত্র। সমস্ত অপকর্মের বিচার করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় মিলনায়তনে ‘দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও পরিবেশের ওপর গুরুত্বসহ আইন প্রয়োগ বিষয়ক’ কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিচারক ও আদালতের প্রতি আমাদের নিবেদন, ন্যায়বিচারের দ্বার উন্মুক্ত করতে গিয়ে থিওরি অব এভিডেন্স আপনারা যেটা অ্যাপ্লাই করেন, সেটা বিবেচনা করবেন। সেটি পুনর্জন্ম করা যায় কি না।
তিনি আরো বলেন, বিগত সময় রাজনৈতিক মামলায় অনেক সাজা হয়েছে। নির্বাচনের আগে পুলিশ বাহিনীকে দিয়ে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা করিয়ে বিভিন্ন মানুষকে আসামি করা হয়েছে। নির্বাচন পর্যন্ত তাদের আটকে রাখা হয়েছে। আমরা এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলাম।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ৫ আগস্টের পর দেশের মাটিতে আর একটি গুমের ঘটনাও ঘটেনি। মাত্র ১০ থেকে ১২ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে বলে একটি মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে। সরকার এসব হত্যাকাণ্ডকে জিরো টলারেন্স হিসেবে দেখছে।
তিনি আরো বলেন, ৫ আগস্টের আগের তত্ত্ব প্রয়োগ করে বিচার বিভাগ জামিন বা বিচার ব্যবস্থাপনায় আদেশ-নির্দেশ করলে ন্যায়বিচার পরাভূত হবে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করি না, করবও না এটি আমাদের অঙ্গীকার। পরিবর্তিত পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিচার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাব।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গণির সভাপতিত্বে কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, আইজিপি বাহারুল আলম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্পেশাল প্রসিকিউটরিয়াল অ্যাডভাইজর অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজি।
কর্মশালায় রংপুর বিভাগের ৮ জেলার প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিচারকবৃন্দ, পাবলিক প্রসিকিউটর, থানার অফিসার ইনচার্জরা অংশ নেন।