
আজ রবিবার থেকে আবারো কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন দেশের ইন্টার্ন চিকিৎসক ও পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকরা। পাশাপাশি মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা ও ক্লাস বর্জন করবেন।
গতকাল শনিবার (০৮ মার্চ) রাতে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ কর্মসূচি ঘোষণা করে দেশের চিকিৎসক কমিউনিটির ১৭টি সংগঠন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এমবিবিএস চিকিৎসক ছাড়া কেউ নামের আগে ডাক্তার পদবী ব্যবহার করতে পারবেন না। এমন দাবিসহ ম্যাটস ইস্যুতে চিকিৎসক ও মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের এসব সংগঠন সমন্নিত উদ্যোগে এই অভিন্ন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে।
আগামী ১২ মার্চ পর্যন্ত চিকিৎসক ও মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের এই কর্মসূচি চলবে। সেদিন ডাক্তার পদবী সংক্রান্ত রিটের রায় ঘোষণা করবেন আদালত। রায় ঘোষণার পর নতুন কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এর আগে ম্যাটস ইস্যুতে চিকিৎসক ও মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের এক গনশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেইনিং কোর্স’র নাম পরিবর্তন করে ‘ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ফ্যাকাল্টি কোর্স’ নামকরণ এবং মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টদের ‘ডিপ্লোমা চিকিৎসক’ হিসেবে পরিণত করার আমলাতান্ত্রিক ভয়াবহ কূটচালের বিরুদ্ধে এই গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয় ও গণশুনানিতে এসব কর্মসূচি গৃহীত হয়। সেই গণশুনানির মতামত অনুযায়ী এসব সংগঠন এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ৯ মার্চ দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত সকল ইন্টার্ন চিকিৎসক এবং চিকিৎসা শিক্ষার্থীরা যথাক্রমে ডিউটি এবং ক্লাস থেকে অব্যাহতি নিয়ে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে মানববন্ধন/অবস্থান কর্মসূচি পালন এবং প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল, ডিরেক্টর, ডিপার্টমেন্ট প্রধানদের নিকট স্মারকলিপি প্রদান, কর্মসূচির ব্যাপারে অবহিতকরণ, গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণ ও পোস্টরিং করবেন।
১০ মার্চ সকাল ১০টা থেকে স্বাস্থ্যখাতে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টদের দুর্বৃত্তায়ন রুখতে অনলাইন ও অফলাইনে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু। সেদিন সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত মশাল মিছিল, মৌনব্রত কর্মসূচি, প্রতীকী এমবিবিএস/বিডিএস সার্টিফিকেট ও বিএমডিসি সার্টিফিকেট পোড়ানো এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বরাবর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যাবতীয় প্রক্রিয়া শুরু করার আল্টিমেটাম।
১১ মার্চ বেলা ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত সকল প্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি ও ক্লাস বর্জন। এসময় ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসক এবং চিকিৎসা শিক্ষার্থীরা যথাক্রমে কর্মবিরতি ও ক্লাস বর্জন করবেন, পাশাপাশি নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন। এছাড়াও বিভিন্ন অংশীজনদের সাথে আলোচনা করে এই কর্মসূচি বর্ধিত করা হবে।
১২ মার্চ সারা দেশে সকল প্রকার একাডেমিক কার্যক্রম ও পরীক্ষা বন্ধ, সকল ইন্টার্ন এবং পোস্ট-গ্রাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকদের কর্মবিরতি। এদিন বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি। ঢাকার চিকিৎসক ও চিকিৎসা শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অংশগ্রহণ করবেন। অন্যরা স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন। একইদিন বিকেল ৪টায় ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শেষে পরবর্তী কার্যক্রম ঘোষণা।
যেসব সংগঠন এই সমন্বিত কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সেই সংগঠনগুলো হলো- আইএফএমএস বাংলাদেশ, এক্সিস মেডিকেল স্কুল, চিকিৎসক ঐক্য পরিষদ, জেনেসিস অনলাইন ইউনিভার্সিটি, ডক্টরস্ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট, ডক্টরস মুভমেন্ট ফর জাস্টিস, বাংলাদেশ ইসলামিক মেডিকেল সোসাইটি, বাংলাদেশ ডক্টরস ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ মেডিকেল কমিউনিটি, বাংলাদেশ মেডিকেল স্টুডেন্ট সোসাইটি, বাংলাদেশি ফরেন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন, বৈষম্যবিরোধী চিকিৎসক ফোরাম, ন্যাশনাল স্টিয়ারিং কমিটি, প্লাটফর্ম ডক্টরস ফাউন্ডেশন, মেডিসিন ক্লাব, মেডিভার্স, রেসিডেন্ট অ্যান্ড ট্রেইনি ডক্টরস অব ডিএমসিএইচ, রিদম বাংলাদেশ ট্রাস্ট, স্টেথোস্কোপ, ভয়েস অব ডক্টরস, হোয়াইট কোট গংলারি, প্ল্যাটফর্ম অব মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল সোসাইটি।