
ধর্ষণের পর হত্যার হুমকি পাওয়া ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল নওরিন উর্মি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। বর্তমানে তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রোববার (৬ এপ্রিল) ঢাকার নিজ বাসায় তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় উর্মিকে লালমাটিয়ায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ছাত্রদলের সাবেক নেতা সোহেল রানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আত্মহত্যা চেষ্টার আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে জান্নাতুল নওরিন উর্মি লেখেন, ‘সরি আব্বু আম্মু। আমি ক্লান্ত। মাফ করে দিও।’ এর পরই আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি।
এদিকে এদিন রাতে উর্মির ফেসবুক আইডি থেকে তার বড় বোন ফাতেমা তুজ জোহরা অন্য একটি পোস্ট করে ঘটনার বিস্তারিত জানান।
তার দেওয়া পোস্টটি হুবহু হলো- ‘আমি ফাতেমা তুজ জোহরা, জান্নাতুল নওরিনের বড় বোন। আজ আমি কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মীর হিসেবে নয়, একজন বড় বোন হয়ে হাসপাতালে ছোট বোনের বেডের পাশে বসে লিখছি।
তিনি আরও বলেন, গতকাল সকালে আমার বোন আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছে। ও এখন অনেক অসুস্থ। একটা বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছে। আমি জানি এখন আপনারা অনেকে হয়তো বাজে মন্তব্য করা শুরু করবেন, করেন তাতে আমাদের এখন আর কিছু যায় আসেনা। কারণ আমরা এখন অনলাইন বিস্ফোরণ মধ্যেই বসবাস করছি। আপনারাই বলেন দল থেকে যৌক্তিক সমালোচনা করতে তার পর তার দায় নেন না।
আমার বাবা মা ভাই বোন বিগত ১৭ বছর জেল জুলুম অত্যাচার সহ্য করেছে। আমার ছোট বোন #নওরিন জেল জুলুম ছাত্রলীগের নির্যাতন সহ্য করেও নতুন সূর্যের অপেক্ষায় সাহসিকতার সাথে রাজপথে টিকে ছিলো। কিন্তু ৫ আগস্টের পরে আজকে বড়ই হতাশ, এতো কষ্টের স্বাধীনতা অর্জনের পরেও আমরা স্বাধীন নই।
সে ধরে নিয়েছে এই অন্ধকার আর কখনোই কাটবেনা। এভাবেই মজলুম কর্মীদের দীর্ঘশ্বাসে ধ্বংস হয়ে যায় ট্রয় সাম্রাজ্য। দলের প্রয়োজনে কর্মীদের ব্যবহার করবেন, সে কর্মীরা দলের কাজ করতে গিয়ে বিপদে পরলে তখন সেই কর্মীকে বেওয়ারিস বানিয়ে দেবেন। যেনো শিয়াল কুকুর বেশি করে ছিঁড়ে খেতে পারে।
১৭ বছর যাদের রক্ত, ঘাম ও শ্রমের উপরে দাঁড়িয়ে আপনারা নেতা হয়েছেন সুসময়ে তাদের গলায় ছুরি বসিয়ে স্বৈরাচার এবং স্বৈরাচারের সাথে আঁতাত করা ব্যক্তিদের নিয়ে আপনারা নিজের কোমর প্রতিষ্ঠা করেন খুবই দুঃখজনক।
এনসিপির বড় বড় নেতারা একজন হবু ধর্ষকের পক্ষে নিউজ করানোর জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়ায়, বিবৃতি দেয়। কারণ এদের কর্মী এদের কাছে রত্ন।
অন্য দিকে আপনারা আপনাদের একজন নির্যাতিত নারী কর্মীরও পক্ষ নিয়ে একটা বিবৃতি দিয়ে বলতে পারেন না ও আমাদের কর্মী আমরা এর পাশে আছি। নেতারা নাকি কর্মীদের মাথার উপরে ছাতার মতো। যে ছাতা ছায়া দেয় না তার প্রয়োজনীয়তা কি বলতে পারেন।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক বা একাধিক আইডি থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের এই নেত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে তিনি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে প্রতিবাদও জানান।